পহেলগামে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার ঘটনার পরে কাশ্মীরের মানুষ ক্রমাগত হেনস্থার শিকার হয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ তুললেন হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ় উমর ফারুক। তাঁর অভিযোগ, উপত্যকার সাধারণ মানুষের উপরে নির্বিচারে দমনপীড়ন চলছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার।
পহেলগামে হামলার পরেই কাশ্মীরে বন্ধ ডাকা হয়েছিল। হামলার কড়া নিন্দা করে তখনই সেই বন্ধকে সমর্থন করেছিল হুরিয়ত কনফারেন্স। ফারুক বলেন, “পহেলগামে হামলার স্পষ্ট ভাষায় নিন্দা করেছেন কাশ্মীরের মানুষ। তার পরেও সমস্ত কাশ্মীরকেই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। কাশ্মীরিদেরই ভুগতে হয় সব সময়। হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হচ্ছে। বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশ কাশ্মীর-বিরোধী প্রচার করে চলায় উপত্যকার বাইরে থাকা কাশ্মীরি ছাত্র ও পেশাজীবীদের অনেকেই আতঙ্কে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।” আলতাফ লালি এবং গুলাম রসুল নামে দুই সাধারণ কাশ্মীরিকে বিচার বহির্ভূত ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ফারুক। এ নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ফারুক বলেন, “প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়াই যদি উদ্দেশ্য হয়, তা হলে জনগণের উপরে এই নির্যাতন কেন?” তিনি বলেন, “একটার পর একটা বেদনা সহ্য করে চলেছেন কাশ্মীরের মানুষ।” পহেলগাম-কাণ্ডের পরে ভিসা বাতিল হওয়ায় পাকিস্তানে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। তার জেরে উদ্ভূত মানবিক সঙ্কটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফারুক বলেছেন, “পরিবার ভেঙে পড়ছে। মা সন্তানের থেকে, স্বামী স্ত্রীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।” সম্প্রতি প্রত্যর্পণের বাসে ৮০ বছর বয়সি পক্ষাঘাতগ্রস্ত আবদুল ওয়াহিদ ভাটের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যদি সত্যিই শান্তি এবং স্থিতিশীলতা চাওয়া হয়, তা হলে এই অমানবিক পদক্ষেপ বন্ধ হওয়া উচিত।”
জম্মু ও কাশ্মীর আওয়ামী অ্যাকশন কমিটিকে নিষিদ্ধ করার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ‘অন্যায় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও দাবি করেছেন হুরিয়ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, “জনগণকে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত না থাকার জন্য পুলিশ লাউডস্পিকার নিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এতে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।” তাঁর মতে, ওই কমিটি সর্বদা শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে থেকেছে। এই ধরনের কৌশল মানুষের আস্থা তৈরির জন্য নয়, বরং ভয় ছড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)