ভারতের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য চিন যদি ব্রহ্মপুত্র নদের জলপ্রবাহ রুদ্ধ করে, তা হলেও কোনও ক্ষতি হবে না অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের। মঙ্গলবার এই দাবি করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ একটি মাত্র উৎস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। ওই নদের মোট জলপ্রবাহের বড় জোর ৩০–৩৫ শতাংশ চিনের অবদান।’’
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। পাক ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তার পরবর্তী সময়ে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংঘাতের পর সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির জল নিয়ে নয়াদিল্লিকে ধারাবাহিক হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইসলামাবাদ। ‘অপারেশন সিঁদুর’-পর্বে প্রকাশ্যে ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল চিন।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতিতে শি জিনপিংয়ের সরকার চিন অধিকৃত তিব্বতে উৎপন্ন ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ রুদ্ধ করলে অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি বিপাকে পড়তে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এমনকি, গত ৩১ মে বেজিংয়ের ‘সেন্টার ফর চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজ়েশন’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ঝিকাইগাঁও ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ কমিয়ে দেওয়ার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। কিন্তু হিমন্তের দাবি, ব্রহ্মপুত্রের ভারতীয় অংশের জলপ্রবাহের ৭০ শতাংশ অবদান অরুণাচল প্রদেশ, অসম, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের।
এক্স পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘ভারতের প্রচণ্ড বর্ষা টইটুম্বুর করে রাখে ব্রহ্মপুত্রকে। কৃষ্ণাই, দিগারু, কুলসির মতো খাসি, গারো ও জয়ন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলোর জল ব্রহ্মপুত্রে মিশে তাকে পুষ্ট করে। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ এবং সুবনসিরি, লোহিত, কামেং, মানস, ধানসিঁড়ি, জিয়া-ভরালি, কোপিলির মতো শাখা নদীগুলোতে জলের অভাব হয় না।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘চিন যদি ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ কমিয়ে দেয়, তবে ভারতের লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। বাৎসরিক বন্যার হাত থেকে অসম মুক্তি পাবে। জনজীবন ব্যাহত হবে না। সম্পত্তির ক্ষতি হবে না।’’ তাঁর দাবি, টিউটিংয়ে ভারত-চিন সীমান্তে ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে ২০০০ থেকে ৩০০০ কিউবিক মিটার। সেই প্রবাহ গুয়াহাটির মতো জায়গায় বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০ হাজার কিউবিক মিটার।