লক্ষ্মীধর বেহেরা। ছবি সংগৃহীত
দেশের এক আইআইটি (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) অধিকর্তার দাবি, তিনি মন্ত্রবলে ‘ভূত ছাড়াতে’ পারেন। শুধু তা-ই নয়, এ কাজ তিনি আগে করেছেন এবং তাতে সাফল্যও পেয়েছেন। যে সংবাদ প্রকাশ্যে আসার পর তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, কারও কোনও কিছুতে বিশ্বাস থাকতেই পারে, কিন্তু তাকে জনসমক্ষে এই ভাবে সত্য বলে প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা করছেন কেন?
বেশ কয়েক বছর আগে একটি পরিবারকে তিনি ‘অশুভ আত্মার কবল থেকে মুক্ত’ করেছিলেন বলে দাবি করেন প্রযুক্তিবিদ্যার ওই বিশেষজ্ঞ। একটি ইউটিউব ভিডিয়োয় গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণও দিয়েছেন তিনি। ভিডিয়োর ওই আইআইটি অধিকর্তার নাম লক্ষ্মীধর বেহেরা। গত বৃহস্পতিবার হিমাচলপ্রদেশের আইআইটি মান্ডির নতুন অধিকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। তবে তার আগে ছিলেন আইআইটি কানপুরে। সেখানে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন লক্ষ্মীধর। আইআইটি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, আইআইটির এই নতুন অধিকর্তা রোবট বিশেষজ্ঞ। এমনকি স্মার্ট প্রযুক্তিতে যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হয়, সে বিষয়েও তার বিশেষ জ্ঞান আছে। পড়াশোনা করেছেন আইআইটি দিল্লি থেকে। পরে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন জার্মানির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফরমেশন টেকনোলজিতে। যে ভিডিয়োটি ঘিরে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক, সেটি সাত মাস আগে একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেছিলেন লক্ষ্মীধর। তবে সেটি প্রকাশ্যে আসে বা তা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে তিনি আইআইটি-র অধিকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর।
বিতর্কিত ভিডিয়োটিতে ১৯৯৩ সালের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন লক্ষ্মীধর। যাঁর সাক্ষী তিনি নিজেই। চেন্নাইবাসী এক বন্ধু ও তাঁর পরিবারকে ‘অশুভ আত্মার কবল’ থেকে তিনি মুক্ত করেছিলেন বলে ভিডিয়োয় দাবি করেছেন রোবট বিশেষজ্ঞ। যা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন যুক্তিবাদীরা।
পাঁচ মিনিটের ভিডিয়ো ক্লিপ। তবু তার মধ্যেই সে দিনের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন আইআইটির প্রফেসর। কী করে স্রেফ ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’-র মতো পবিত্র মন্ত্র তাঁকে ভূত তাড়াতে সাহায্য করেছিল, কী ভাবে বন্ধুর চলচ্ছক্তিহীন বাবা হঠাৎই হাঁটতে শুরু করেছিলেন। সবই জানিয়েছেন লক্ষীধর ওই ভিডিয়োয়। এমনকি ওই ‘সত্যকাহিনি’-র এক জায়গায় তাঁকে এ ও বলতে শোনা যায় যে, ‘‘বন্ধুর বাবা, যিনি একজন ছোট খাটো চেহারার মানুষ, তাঁর মাথা হঠাৎই ঘরের ছাদ স্পর্শ করে!’’ লক্ষ্মীধর বলেছেন এ সবই ছিল ওই অশুভ আত্মার কাজ। যাকে টানা ৪৫ মিনিট মন্ত্রোচ্চারণ করে তবেই তাড়াতে পেরেছিলেন তিনি। এ ব্যাপারে তাঁর নিয়িমত গীতাপাঠের অভ্যাসও যে কাজে দিয়েছিল, সে কথাও ভিডিয়োয় বলতে ভোলেননি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক। শেষে অবশ্য লক্ষ্মীধর জানিয়েছেন, পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা আছে বিজ্ঞানে যার ব্যখ্যা মেলে না। যদিও সমালোচকদের বক্তব্য, প্রফেসরের বাহ্যজ্ঞান কোনও কারণে লোপ পেয়েছিল হয়তো।
‘লার্ন গীতা লিভ গীতা’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছিল। তবে ভিডিয়োটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সেটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে এক সংবাদ সংস্থার তরফে লক্ষ্মীধরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘‘আমি যা বলেছি, তা-ই বলতে চেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি ভূত আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy