Advertisement
E-Paper

৮ দিন পর আইপিএস অফিসারের দেহের সৎকার হল, তবে ‘আত্মঘাতী’ পুলিশকর্মীর দেহ এখনও পড়ে মর্গে!

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিংহ সাইনি মৃত এএসআইয়ের বাড়িতে যান। তিনি সুবিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। কোন প্রেক্ষিতে নিজেকে শেষ করার মতো সিদ্ধান্ত নিল ছেলে, আগে সেটা পুলিশকে স্পষ্ট করতে বলছে পরিবার।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫৩
Haryana Cops Death Case

আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণ কুমার। গত ৭ অক্টোবর আত্মঘাতী হন তিনি। —ফাইল চিত্র।

বিস্তর টানাপড়েন শেষে ‘আত্মহত্যা’র আট দিন পর আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণ কুমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল বুধবার। হরিয়ানা পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (এডিজি) সার্ভিস রিভলভার দিয়ে নিজেকে শেষ করে দেন, দাবি পুলিশের। কিন্তু মৃত্যুর ‘সঠিক কারণ’ না-পাওয়া পর্যন্ত পুলিশকর্তার দেহ নিতে অস্বীকার করেন স্ত্রী। দেহের ময়নাতদন্তেরও অনুমতি দিচ্ছিল না পরিবার। এফআইআর-ও দায়ের করা হয়নি। এক সপ্তাহ মর্গেই ছিল দেহ। অবশেষে ওই জটিলতা কেটেছে।

অন্য দিকে, ওই একই কারণে ‘আত্মঘাতী’ অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপ লাথেরের শেষকৃত্য হল না বুধবারও।

গত ৭ অক্টোবর চণ্ডীগড়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণের দেহ। অভিযোগ, মাথায় সার্ভিস রিভলভার ঠেকিয়ে ট্রিগারে চাপ দিয়েছিলেন তিনি। ‘আত্মঘাতী’ পুলিশ আধিকারিকের ঘর থেকে উদ্ধার হয় আট পাতার চিঠি। হরিয়ানা পুলিশের দাবি, সেটি সুইসাইড নোট। তাতে মোট ১০ জন প্রাক্তন এবং বর্তমান পুলিশকর্তার নাম রয়েছে। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘নিচু জাত’ বলে কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত মানসিক ভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন তিনি। নিজের ডিপার্টমেন্টে ‘অচ্ছুত’ করে রাখা হয়েছিল তাঁকে।

আইপিএস অফিসারের মৃত্যুর তদন্ত চলছিল। ঠিক তার সাত দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর রহস্যজনক ভাবে মারা যান এএসআই সন্দীপ। তিনি ছিলেন ওয়াই পূরণের মৃত্যু মামলার তদন্তকারীদের এক জন। গত মঙ্গলবার রোহতকের একটি মাঠ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করেন সহকর্মীরা। হরিয়ানা পুলিশের দাবি, সন্দীপও সার্ভিস রিভলভার দিয়ে নিজেকে গুলি করেছেন। এবং তিনিও একটি সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন। তিন পাতার সেই চিঠিতে রয়েছে ‘আত্মঘাতী’ আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণের নাম এবং দাবি, দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন ওই আধিকারিক। অপরাধজগতের লোকজনকে বাঁচানোর জন্য তাঁদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন। এ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। কিন্তু তার পরেও ময়নাতদন্ত করার অনুমতি পায়নি হরিয়ানা পুলিশ।

‘আত্মঘাতী’ এএসআইয়ের পরিবারের দাবি, আইপিএস অফিসারের মৃত্যুর তদন্তে নেমে তাঁর দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করে চাপে পড়েছিলেন সন্দীপ। ওই দেহরক্ষীকে ঘুষকাণ্ডে ধরা হয়। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করার পরে কী ভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন, সে কথা মৃত্যুর দু’দিন আগে পরিবারকে জানিয়েছিলেন এএসআই। পরিবার তাই দেহ পুলিশের হাতে দিতে অস্বীকার করেছে। এখনও মর্গেই রয়েছে এএসআইয়ের দেহ।

সন্দীপের পরিবার জানিয়েছে, ‘আত্মঘাতী’ আইপিএস অফিসারের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হলে তারা তদন্তে সহায়তা করবে। ওয়াই পূরণের স্ত্রী আইএএস অফিসার অমনীত পূরণ কুমারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ করেছিলেন ‘আত্মঘাতী’ এএসআই। বুধবার সন্দীপের বাড়ির লোকজন স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, অমনীতের বিরুদ্ধে হরিয়ানা পুলিশ এফআইআর দায়ের করলে তবেই ময়নাতদন্ত করতে অনুমতি দেবেন তাঁরা। মৃত পুলিশকর্মীর ভাই ভূপ সিংহ বলেন, ‘‘মৃত্যুর পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও এফআইআর দায়ের হল না। আমরা আবার বলে দিচ্ছি, এফআইআর না-হলে দেহের ময়নাতদন্ত হবে না।’’

এর মধ্যে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিংহ সাইনি মৃত এএসআইয়ের বাড়িতে যান। তিনি সুবিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। কোন প্রেক্ষিতে নিজেকে শেষ করার মতো সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি, আগে সেটা পুলিশকে স্পষ্ট করতে বলছে পরিবার। অন্য দিকে, ওয়াই পূরণের স্ত্রী স্বামীর মৃত্যুতে ঊর্ধ্বতন পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি এবং বর্ণভিত্তিক বৈষম্যের অভিযোগ করে মামলা করেছেন।

Haryana Police Cop Death Crime Haryana
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy