Advertisement
E-Paper

বেজিংয়ের সঙ্গে রফায় কি জমি খোয়ানোর প্যাঁচ  

পাশাপাশি, চিনের উপর থেকে আর্থিক নির্ভরতা কমানোর জন্য যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছে ভারত, সেগুলিতে যেন ঢিলে না-দেওয়া হয়, এটাই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:০৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মারাত্মক শীতে গোটা বিষয়টির উপর আলোচনার চাদর চাপা দেওয়া। বসন্ত এলে, দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায় আপস করে চিনকে পিছু হটানো। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব-লাদাখের সঙ্কটমোচনে আপাতত এই সূত্রের কথাই ভাবছে নয়াদিল্লি।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই সূত্রটি নিয়েই। গত শুক্রবার কোর কমান্ডার স্তরের অষ্টম দফার বৈঠকে প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া অঞ্চলে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনার পশ্চাদপসরণ এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চল থেকে সেনা ও সামরিক সাজসরঞ্জাম কমানো নিয়ে ‘ইতিবাচক আলোচনা’ হয়েছে বলেই দাবি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেনাপ্রধান বিবৃতি দিয়ে বলেন, চিনের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঐকমত্যের পথে দু’দেশ। কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন, পরিস্থিতি হয়তো নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু তার জন্য ভারতকে কি নিজের ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে? এপ্রিলের আগের নিয়ন্ত্রণরেখায় যে স্থিতাবস্থা ছিল তা কি ফিরে পাবে ভারত?

চিনা সেনার প্রাথমিক দাবি ছিল, প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণ তীর থেকে পিছোবে ভারতীয় সেনা। চিনা সেনা আগের অবস্থানেই অনড় থাকবে। কিন্তু ৭ দফা আলোচনার পর, চিনকে এটুকুতে রাজি করানো গিয়েছে যে, ভারতের সঙ্গে পিছোবে তাদের সেনাও। এপ্রিলের আগের অবস্থান অর্থাৎ প্যাগং ফিঙ্গার ৪ থেকে পিছিয়ে ৮-এর কিছুটা পূর্বে সরে যাবে। কিন্তু, চিনের এই সূত্র মেনে নিলে ফিঙ্গার ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত এলাকায় কোনও পক্ষেরই টহলদারির অধিকার থাকবে না। আরও স্পষ্ট করে বললে, প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত এলাকায় ভারতীয় সেনা এপ্রিলের আগে টহল দিত। এর পর আর পারবে না। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিনের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের পর তারা পিছিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে ঐকমত্য তৈরি করছে ঠিকই, কিন্তু তার মধ্যে প্যাঁচ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় ভূখণ্ডের একটা অংশ ছাড়তেই হচ্ছে।

প্রশ্ন উঠছে, ভারত টহলদারির অধিকার ছাড়া মাত্রই ফিংগার ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত এলাকা হয়ে যাবে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। ভবিষ্যতে ভারতের টহলদারি না-থাকার সুযোগ নিয়ে চিন যে ফের সেনা অনুপ্রবেশ ঘটাবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। বরং চিনের এই আগ্রাসন এবং ভারতীয় সেনার হত্যাকাণ্ডের পর নয়াদিল্লির পক্ষে ওই অঞ্চলে (ফিংগার ৪ থেকে ৮) টহলদারি এবং পোস্ট আরও বাড়ানোর কথাই বলছেন রণকৌশল বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, গত কয়েক মাসে বেজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আস্থা তলানিতে চলে গিয়েছে।

পাশাপাশি, চিনের উপর থেকে আর্থিক নির্ভরতা কমানোর জন্য যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছে ভারত, সেগুলিতে যেন ঢিলে না-দেওয়া হয়, এটাই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। ভারতের ডিজিটাল বাজারে চিনকে যতটা কম ঢুকতে দেওয়া যায়, কৌশলগত ভাবে সেটা ততটাই সুবিধাজনক বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ভারতের তথ্য নিয়ে চিন অপব্যবহার করবে কি না, সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ থাকা যাচ্ছে না। চিনের উপর প্রকৃত চাপ বাড়াতে দেশের বাজার তাদের জন্য বন্ধ করে বিকল্পের কথা ভাবাটাই প্রয়োজনীয় বলেই মনে করছে কূটনীতিকদের একটি অংশ।

China India East-Ladakh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy