মেহুল চোক্সী। —ফাইল চিত্র।
পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোক্সীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে অ্যান্টিগাকে আবেদন জানিয়েছে ভারত। অ্যান্টিগায় থাকাকালীন স্থল, জল এবং আকাশপথে চোক্সী যাতে যাতায়াত করতে না পারেন, সে জন্য ওই দেশের প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে ভারত।
সম্প্রতি ভারত জানতে পারে মেহুল চোক্সী ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগায় রয়েছেন। ব্যবসার প্রয়োজনে ওই দেশে রয়েছেন বলে মেহুল দাবি করেন। তার পর থেকেই মেহুলকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, এ বার অ্যান্টিগার জর্জটাউনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে অ্যান্টিগা এবং বারবুদা সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে। মৌখিক এবং লিখিত— দু’ভাবেই অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে মেহুলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয় এবং স্থলপথ, জলপথ এবং বিমানপথে তাঁর যাতায়াত প্রতিরোধ করা হয়। মেহুল যাতে অ্যান্টিগা ছেড়ে অন্যত্র পালাতে না পারেন তার জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে চলেছে ভারত। সে দেশে মেহুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি অ্যান্টিগা সরকারের সঙ্গে আলোচনাও করবে ভারত।
ভারতের সঙ্গে অ্যান্টিগার কোনও প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় মেহুলকে ভারতে ফেরানো যাচ্ছে না। অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগে জানলে মেহুলকে নাগরিকত্ব দেওয়া হত না। কিন্তু আমাদের কাছে মেহুল সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ধারণা ছিল না।’’ তবে মেহুলকে ফেরাতে ভারতকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে অ্যান্টিগা সরকার জানিয়েছে। ভারতের এই আবেদনও খতিয়ে দেখা হবে জানিয়েছে সে দেশের সরকার।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের ফল: ট্রাই প্রধানের আধার নিয়ে ছেলেখেলা করে চলেছেন হ্যাকাররা
গত বছর নভেম্বর মাসে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল মেহুলকে। সে দেশের সরকারের বক্তব্য, সেই সময়ে ভারতের কাছে সবিস্তার মেহুল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা চলছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু সেই মুহূর্তে কোনও অভিযোগ ছিল না। নভেম্বরে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব পাওয়ার পরে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পিএনবি-প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার আগেই ভারত ছেড়ে চম্পট দেন মেহুল। ১৫ জানুয়ারি অ্যান্টিগায় নাগরিক হওয়ার শপথ নেন তিনি। এর ঠিক পরেই, ২৯ জানুয়ারি সিবিআই তাঁর ও নীরব মোদীর বিরুদ্ধে ১৩,৫০০ কোটি টাকার জালিয়াতির মামলা রুজু করে।
তাঁর বিরুদ্ধে মে মাসে চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। জারি হয়েছে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। তাঁকে দেশে ফেরাতে রেড কর্নার নোটিস জারির জন্য ইন্টারপোলে গিয়েছে সিবিআই। সেই নোটিস নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
দেশে ফিরতে তিনি ভয় পাচ্ছেন বলে ইতিমধ্যেই আইনজীবীর মাধ্যমে দাবি করেছেন চোক্সী। দেশে ফিরলে তিনি গণপিটুনির শিকার হবেন, এই ‘আশঙ্কায়’ তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিলের জন্য মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতেও আবেদন করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy