ভারত-পাক উত্তেজনার পরিস্থিতি আগের তুলনায় খানিক থিতিয়ে এসেছে। সেই আবহেই পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারির ঢঙে ভারতের সামরিক ক্ষমতা জাহির করলেন শীর্ষ সেনাকর্তা। বললেন, ভারত চাইলে গোটা পাকিস্তান উড়িয়ে দিতে পারে। আর এমনটা হলে লুকোনোর জন্য গভীর গর্ত খুঁজে বার করতে হবে পাক সেনাকে!
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা বিভাগের ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুমের ইভান ডি’কুনহা বলেছেন, ‘‘পুরো পাকিস্তানই আমাদের আওতার মধ্যে। ভারত চাইলে গোটা পাকিস্তানে আঘাত হানার সামরিক ক্ষমতা রাখে! যদি পাক সেনাবাহিনী রাওয়ালপিন্ডি থেকে তাদের সদর দফতর স্থানান্তর করে, তাহলে লুকোনোর জন্য তাদের গভীর গর্ত খুঁজে বার করতে হবে।’’ ডিজির দাবি, ভারতের কাছে গোটা পাকিস্তান দখল করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্রভান্ডার রয়েছে। তাই, পুরো পাকিস্তানই ভারতের সামরিক আওতার মধ্যে। পাক সেনা তাদের সদর দফতর রাওয়ালপিন্ডি থেকে খাইবার পাখতুনওয়া অথবা যেখানেই স্থানান্তরিত করুক না কেন, ভারতের আওতা থেকে পালাতে পারবে না।
আরও পড়ুন:
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার আবহে মূলত সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি পাক বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দাবি করেন, সেই হামলার অভিঘাত পাক সেনার সদর দফতর রাওয়ালপিন্ডিতেও টের পাওয়া গিয়েছে। এই অভিযানের সাফল্যের নেপথ্যে ছিল দূরপাল্লার ড্রোন এবং অন্যান্য নানা যুদ্ধাস্ত্রের মতো উন্নত দেশীয় প্রযুক্তি। সেই প্রসঙ্গ টেনেই লেফটেন্যান্ট ডি’কুনহা বলেন, ‘‘পাকিস্তান চার দিনে পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌসেনা এবং বিমানবাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় সমস্ত ড্রোনকে সফল ভাবে ধ্বংস করা গিয়েছে। ওরা জনবহুল এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালালেও আমরা এটা নিশ্চিত করেছিলাম, যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি না হয়।’’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বেড়েছে। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। গত ৭ মে মধ্যরাতে ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’। প্রত্যাঘাতের এই অভিযানে বেছে বেছে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা হয়। এর পর পাল্টা গোলাবর্ষণ শুরু করে পাকিস্তানও। টানা চার দিন দুই দেশের মধ্যে এই সংঘাত চলেছে। পরে অবশ্য সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই পক্ষ।