ফাইল চিত্র।
চিনের সঙ্গে চলতি সংঘাতের বাতাবরণে আজ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি দেশের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসিয়ান গোষ্ঠীর দেশগুলির সঙ্গে আলোচনার মুল বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে, বিভিন্ন মাধ্যমে সংযোগ বাড়ানো এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মুক্ত ও উদার বাণিজ্যপথ তৈরির দিকটি।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, গোটা বিষয়টি আসিয়ান-ভারত নির্দিষ্ট আলোচনার কাঠামোর মধ্যে হলেও তা বেজিংয়ের কাছে চাপের। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে দু’দশক ধরে মূলত দু’টি কারণেই গুরুত্ব দিয়ে আসছে ভারত। প্রথমত, এই গোষ্ঠীতে চিন ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ছায়ায় সার্বিক কর্মসূচি থমকে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দ্বিতীয়ত, আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়িয়ে সরকারের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে কার্যকর করার এটিই সেরা মঞ্চ।
মোদী আজকের সম্মেলনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য ঐক্যবদ্ধ, সংবেদনশীল আসিয়ান গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। আসিয়ান গোষ্ঠীর দশটি দেশের সঙ্গে সামাজিক, ডিজিটাল ও অর্থনীতি-সহ সব রকমের যোগাযোগ বাড়ানো নয়াদিল্লির অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে বলেই জানান তিনি। মোদী বলেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য নয়াদিল্লির পরিকল্পনা ও উদ্যোগের সঙ্গে আসিয়ানভূক্ত দেশগুলির দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ মিল রয়েছে।
আরও পডুন: কাঁটার আসন! সংশয়ে নীতীশ
বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজকের বৈঠকে বিশেষ ভাবে আলোচিত হয়েছে দক্ষিণ চিন সাগরের নিরাপত্তা ও সুস্থিতির প্রসঙ্গ। সাউথ ব্লকের কথায়, আন্তর্জাতিক আইন মেনে নৌপথের স্বাধীনতা বজায় রেখে দক্ষিণ চিন সাগরে শান্তি চাইছে সকলে। সেই কাজে আসিয়ান এবং ভারত যৌথ ভাবে উদ্যোগী। এটা স্পষ্ট যে নাম না করে চিনের দিকেই নিশানা করা হয়েছে। চিনের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত একাধিপত্য কমানোর জন্য সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি। পাশাপাশি, এ ব্যাপারে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ইউরোপের দেশগুলিও একই ভাবে উৎসাহী। কারণ, প্রতিটি দেশই বাণিজ্যিক কারণে উন্মুক্ত ও কোনও বিশেষ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণহীন জলপথ চাইছে। ভারতের ভূকৌশলগত অবস্থানের কারণে এই অঞ্চলের নীতি নির্ধারণে এবং চিনের মোকাবিলায় নয়াদিল্লিকে ভারত- প্রশান্তমহাসাগরীয় নীতির কেন্দ্রে রাখতে চাইছে দেশগুলি।
বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রের মতে, বিষয়টি নিয়ে একদিকে যেমন কূটনৈতিক লাভ, তেমনই ঝুঁকির দিকও থেকে যাচ্ছে। তাই সমুদ্রনীতিতে ভারসাম্য বজায় রেখে সতর্ক ভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত এবং আসিয়ানের মধ্যে সামাজিক, আর্থিক এবং সমুদ্রপথে সংযোগের প্রবল গুরুত্ব রয়েছে। কয়েক বছরে আমরা এই ক্ষেত্রগুলিতে কাছাকাছি এসেছি। মোদী বলেন, “আসিয়ান এবং ভারতের মধ্যে কৌশলগত সংযোগের পিছনে রয়েছে ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও তার মেলবন্ধন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy