E-Paper

পাক-আফগান অশান্তি চলবেই, অভিমত দিল্লির

ভারত এবং তালিবানের সঙ্গে সংঘাতের জন্য পাকিস্তান নিজেকে প্রস্তুত করছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ভারত সীমান্তে ‘নোংরা খেলা খেলতে পারে’ বলেও তিনি দোষারোপ করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:৫৪

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সংঘর্ষবিরতি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফের যুযুধান তালিবান ও পাকিস্তান। তালিবানের দাবি, পাক বাহিনী আফগানিস্তানের পাকটিকা প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে আকাশপথে হামলা চালিয়েছে। ফলে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ হয়েছে। পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ খুব দ্রুত মিটবে না বলেই মনে করছে নয়াদিল্লির গোয়েন্দা সূত্র। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, এবং তার প্রভাব ভারতের নিরাপত্তার উপর কতটা পড়ে, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে ভারত এবং তালিবানের সঙ্গে সংঘাতের জন্য পাকিস্তান নিজেকে প্রস্তুত করছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ভারত সীমান্তে ‘নোংরা খেলা খেলতে পারে’ বলেও তিনি দোষারোপ করেন।

সংঘর্ষবিরতির পরে আজ কাতারের দোহায় তালিবানের সঙ্গে আলোচনার জন্য পৌঁছেছে এক পাক প্রতিনিধি দল। আগামিকাল পৌঁছনোর কথা তালিবান প্রতিনিধি দলের। কিন্তু আজ তালিবান সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, পাকটিকা প্রদেশের আরগুন ও বেরমাল জেলায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়। পাক-আফগান সীমান্তে সংঘর্ষ কয়েক দিন চলার পর বুধবার সাময়িক ভাবে ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষিত হয়েছিল। তবে আজ আফগানিস্তানের আত্মঘাতী হামলায় উত্তর ওয়াজ়িরিস্তানে ৭ জন পাকিস্তানি সেনার প্রাণ গিয়েছে। ১৩ জন জখম। পাক সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ওয়াজ়িরিস্তানে খাদি সেনা-শিবিরের কাছে সীমানা প্রাচীরের বাইরে একটি বিস্ফোরক-বোঝাই গাড়ি নিয়ে আসে এক জঙ্গি। সে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। আরও দুই আততায়ী সেনা-শিবিরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তাদের মেরে ফেলা হয়। পরে ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) হামলার দায় নিয়েছে।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, তালিবান দিল্লির মাটি থেকে যে ভাষায় পাকিস্তানকে অপদস্থ করেছে, তা দু’বছর আগেও ভাবনার বাইরে ছিল। সে দেশের মানুষ বিশেষ করে যুবাশক্তিও ফুটছে পাকিস্তান সেনা ও আইএসআই-এর বিরুদ্ধে, এমনই খবর নয়াদিল্লির কাছে। মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে লস্কর-ই-তইবা এবং ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি)-র মধ্যে জোট হওয়ার কারণে। পাকিস্তানের মদতে আইএসকেপি-র প্রশিক্ষণ হয় বালোচিস্তানে। এদের নিশানা বালোচ জাতীয়তাবাদী এবং কাবুলের তালিবান সরকার। সূত্রের খবর, আইএসকেপি-র নেটওয়ার্ক বিস্তৃত পশ্চিম এশিয়া এবং রাশিয়ায়। লস্করের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ায় এদের শক্তি আরও বেড়েছে। তালিবানের মুখপাত্র জুবাইউল্লাহ মুজাহিদ সম্প্রতি দাবি করেছেন, সম্প্রতি ইরানের কেরমানে বোমা হামলার পিছনে রয়েছে আইএসকেপি, যাদের মদতদাতা পাকিস্তান।

বৃহস্পতিবার পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছিলেন, ভারতের মদতে যুদ্ধ চালাচ্ছে কাবুল। সংঘর্ষবিরতি ৪৮ ঘণ্টাও স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘‘সংঘর্ষবিরতি আদৌ বজায় থাকবে কি না সন্দেহ আছে। এই সিদ্ধান্ত তো দিল্লি থেকে নেওয়া হচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়ালের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে আশ্রয় দেয়, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দেয়। প্রতিবেশীদের দোষারোপ করা ওদের পুরনো স্বভাব।’’আর খাজা আসিফের দাবি, তালিবানের মতো পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে জড়াতে পারে নয়াদিল্লি। সে কথা মাথায় রেখেই দ্বিমুখী যুদ্ধের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।ভারত সীমান্তেও উত্তেজনা ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আসিফ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India Afghanistan India Pakistan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy