চন্দ্রভাগা নদীর উপর একটি খাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে ভারত সরকার। ওই খাল বড় করা গেলে আরও বেশি জল ঢুকবে ভারতে। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদের এই পশ্চিমমুখী উপনদীটির জল পাকিস্তান ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরে চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। তার পরেই চন্দ্রভাগার খাল সম্প্রসারণের কথা ভাবা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানিয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, চন্দ্রভাগার উপর ‘রণবীর’ খালটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে নয়াদিল্লি।
পিটিআইকে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, চন্দ্রভাগা নদীর জল ভারত খুব একটা ব্যবহার করতে পারে না। যে সামান্য জল আসে, তা সেচের কাজে লাগে। কিন্তু সিন্ধুচুক্তি স্থগিত হওয়ার পর এখন এই নদীকে আরও বেশি করে কাজে লাগানোর পথ খুলে গিয়েছে। বিশেষ করে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই জল ব্যবহার করা যায়, তাতে ভারতে বিদ্যুতের চাহিদাও মিটবে।
আরও পড়ুন:
সরকারি সূত্রের দাবি, চন্দ্রভাগা-সহ পাকিস্তানের ব্যবহৃত নদীগুলিকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আরও ৩০০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি করার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। ওই অঞ্চলে সমীক্ষার পরিকল্পনাও করা হয়ে গিয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমাদের অন্যতম প্রধান পরিকল্পনা হল, চন্দ্রভাগার উপর রণবীর খালের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ১২০ কিলোমিটার করা। তবে এ সব কাজ তো সময়সাপেক্ষ। আমরা সকলকে বলেছি, যত দ্রুত সম্ভব প্রক্রিয়া শুরু করতে।’’
শুধু খাল সম্প্রসারণ নয়, নদীগুলি নিয়ে আরও পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। ইতিমধ্যে কাঠুয়া, রবি, পরাগওয়ালের মতো খালে পলি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। এতে এই খালগুলিতে জলধারণের ক্ষমতা বাড়বে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাতে পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। তখনই স্থগিত করা হয় সিন্ধুচুক্তি। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি হয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে। সিন্ধু নদ এবং তার পাঁচ উপনদীর জল কোন দেশের মধ্যে কী ভাবে বণ্টিত হবে, তা এই চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বিপাশা, ইরাবতী এবং শতদ্রু নদীর জল ব্যবহার করে ভারত। পশ্চিমমুখী সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগার জল ব্যবহার করে পাকিস্তান। সেই দেশের কৃষিকাজের ৮০ শতাংশ এই জলের উপর নির্ভরশীল। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর প্রত্যাঘাতের অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারত। তার পর দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার নিয়েছিল। তবে সংঘর্ষবিরতিতে ভারত এবং পাকিস্তান সম্মত হলেও এখনও সিন্ধুচুক্তি স্থগিতই রয়েছে।