জিনজিয়াং এবং তিব্বতের স্বাধীনতার দাবিতে ভাষণ দলকুন ইসার।
মাসুদ আজহারের পাল্টা দলকুন ইসা। জৈশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদকে নিষিদ্ধ করার ভারতীয় প্রচেষ্টা রাষ্ট্রপুঞ্জে আটকে দিয়েছে চিন। এ বার ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের প্রধান দলকুন ইসাকে হিমাচল প্রদেশে আসার জন্য ভিসা দিল ভারত।
কে এই দলকুন ইসা? চিনের সরকারের কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি’ তিনি। সে দেশের জিনজিয়াং প্রদেশের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী উইঘুর সম্প্রদায়। মুসলিম ধর্মাবলম্বী উইঘুররা চিনের শাসন মানতে অস্বীকার করছেন বহু দিন ধরেই। ফলে দীর্ঘ কাল ধরে জিনজিয়াং প্রদেশ অশান্ত। নাশকতা, বিস্ফোরণ এবং জঙ্গি কার্যকলাপে রক্তাক্ত পশ্চিম চিনের এই বিশাল এলাকা। ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসকে তাই জঙ্গি সংগঠন মনে করে চিন। সংগঠনের নেতা দলকুন ইসার নামে চিনের পুলিশ তো রেড কর্নার নোটিস তো জারি করেইছে। ইন্টারপোলকে দিয়েই রেড কর্নার নোটিস জারি করানো হয়েছে তাঁর নামে।
চিনের কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ দলকুন জার্মানিতে থাকেন। হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায় দলাই লামার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে একটি প্রতিনিধি দলও আসছে। দলাই লামার সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও ‘গণতন্ত্র ও চিন’ শীর্ষক একটি সম্মেলনেও অংশ নেবেন দলকুন। চলতি মাসের শেষেই দলকুন ইসার এই ভারত সফর নির্ধারিত হয়েছে।
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছেন, ‘‘দলকুন ইসা এক জন সন্ত্রাসবাদী। তাঁর নামে ইন্টারপোলের এবং চিনের পুলিশের রেড কর্নার নোটিস রয়েছে। তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় পৌঁছে দিতে সব দেশই দায়বদ্ধ।’’
আরও পড়ুন:
‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’-এর বিধ্বংসী রূপ
ভারত অবশ্য চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এই বার্তাকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না। কূটনৈতিক মহল বলছে, দলকুন ইসাকে ভারতে আসার ভিসা দেওয়া মাসুদ আজহার কাণ্ডের প্রতিক্রিয়া। পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ-এর প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি তুলে সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব আনে ভারত। একেবারে শেষ মুহূর্তে ভেটো প্রয়োগ করে আজহারকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব পাশ হওয়া আটকে দিয়েছে চিন। পঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলায় মূল অভিযুক্ত এই মাসুদ আজহার। তাঁকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া চিন যে ভাবে ভেস্তে দিয়েছে, তাতে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত। এর প্রতিক্রিয়া যে হবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এত দ্রুত এত বড় পদক্ষেপ ভারত নিয়ে নেবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। তিব্বতের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা এবং তিব্বতের নির্বাসিত সরকারকে ধরমশালায় আশ্রয় দিয়ে আগেই বেজিং-এর বিরাগভাজন হয়েছিল নয়াদিল্লি। এ বার চিনেরই স্বাধীনতাকামী উইঘুর সম্প্রদায়ের নেতাকে সেই দলাই লামার সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ করে চিনের অস্বস্তি ভারত আরও বাড়িয়ে দিল। দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের দুই বিশাল এলাকা জিনজিয়া আর তিব্বতের স্বাধীনতীকামী নেতারা ভারতের মাটিতে এক সঙ্গে বৈঠকে বসছেন, এই বিষয়টি সহজে মানতে পারছেন না শি চিনফিংরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy