Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাস-বিরোধী বৈঠক সেই তাজে

১৪ বছর আগে এই তাজ হোটেলে পাকিস্তানের মদতেপুষ্ট লস্কর জঙ্গিরা তিন দিন ধরে হামলা চালিয়ে তিরিশ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছিল। সব মিলিয়ে তিরিশ জন বিদেশি-সহ ওই হামলায় মারা গিয়েছিলেন মোট ১৬৬ জন।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৬
সন্ত্রাসবাদী হামলার জেরে জ্বলছে মুম্বইয়ের তাজ হোটেল। ফাইল চিত্র

সন্ত্রাসবাদী হামলার জেরে জ্বলছে মুম্বইয়ের তাজ হোটেল। ফাইল চিত্র

তাজ হোটেলের বিখ্যাত গম্বুজের পিছনে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। ২৬/১১ হামলার প্রতীক হিসেবে বিশ্ব মনে রেখেছে এই ছবি। চলতি মাসের শেষে মুম্বইয়ের সেই হোটেলেই বসতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির একটি বৈঠক।

১৪ বছর আগে এই তাজ হোটেলে পাকিস্তানের মদতেপুষ্ট লস্কর জঙ্গিরা তিন দিন ধরে হামলা চালিয়ে তিরিশ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছিল। সব মিলিয়ে তিরিশ জন বিদেশি-সহ ওই হামলায় মারা গিয়েছিলেন মোট ১৬৬ জন। এরপর বার বার হামলা সংক্রান্ত তথ্য ও প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও ইসলামাবাদ মূল ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আর এ বার সেই হামলার অন্যতম কেন্দ্রস্থলে আন্তর্জাতিক স্তরের সর্বোচ্চ সন্ত্রাস-বিরোধী বৈঠকের আয়োজন করে বাকি বিশ্ব এবং পাকিস্তানকে ভারত কড়া বার্তা দিতে চাইছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের উদাহরণ তুলে ধরার জন্য এর থেকে ভাল জায়গা আর হয় না। এ বার সেখানেই সন্ত্রাসদমন নিয়ে কৌশল বিনিময় করবেন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ১৫টি প্রতিনিধি সদস্য দেশের কর্তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটি একটি যৌথ ঘোষণাপত্র দিল্লি থেকে প্রকাশ করবে বলে জানা গিয়েছে।

২৮-২৯ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির দু’টি বৈঠকের আয়োজন করছে ভারত। তার মধ্যে একটি বসবে মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে। অন্যটি হবে দিল্লিতে। কূটনৈতিক শিবির বলছে, সন্ত্রাস-বিরোধী এই কমিটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতর নিউ ইয়র্কের বাইরে বৈঠকে বসছে, এমন ঘটনা খুবই বিরল। সূত্রের দাবি, নয়াদিল্লির নিরবচ্ছিন্ন দৌত্যে তা সম্ভব হয়েছে। ভারত এই বছর এই কমিটির নেতৃত্বেও রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, নিউ ইয়র্কের বাইরে এই বৈঠক করতে কমিটির রাজি হওয়ার অর্থ, সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের কূটনৈতিক ভূমিকা এবং উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়া।

জানা গিয়েছে, সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির সদস্যরা মুম্বই হামলার স্মারকস্থানে শ্রদ্ধার্ঘ্যও দেবেন। ভারতের কূটনৈতিক কর্তারা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছেন যাতে আসন্ন বৈঠকের শেষে মুম্বই এবং দিল্লির মাটি থেকে জঙ্গি দমনে কড়া বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়। জঙ্গি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির মধ্যে সমন্বয়কে তুলে ধরতেও সক্রিয় নয়াদিল্লি।

সূত্রের খবর, মূলত তিনটি বিষয়কে নয়াদিল্লি বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে চাইছে। এক, সন্ত্রাসে ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যম, দুই সন্ত্রাসে পুঁজির জোগান, তিন, ড্রোনের মাধ্যমে হামলার নতুন পাক কৌশল। এটা ঘটনা যে ভারতের পাকিস্তান-বিরোধিতার প্রশ্নে এই বৈঠক নিষ্কণ্টক হবে না। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য চিন ইতিমধ্যেই লস্করের জঙ্গি সাজিদ মীর, আব্দুল রহমান মাক্কি অথবা জইশ-ই-মহম্মদের নেতা আব্দুল রউফ আসগরকে আন্তর্জাতিক জঙ্গিতালিকাভুক্ত করার জন্য ভারত-আমেরিকার যৌথ প্রয়াস আটকে দিয়েছে দফায় দফায়। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাজিদ মীর ছিল মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ এ-ও মনে করছেন যে, তাজ হোটেল থেকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া বার্তায় বেজিং-কেও শামিল করা গেলে, তা এক রকম কূটনৈতিক জয় হতে পারে।

Taj Hotel Mumbai UN
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy