ফাইল চিত্র।
দেশে কোভিড সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যাপক অক্সিজেন সঙ্কট। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন নির্মাণের কাজ নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক বিতর্ক। আজ তাকেই উস্কে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফের কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। বক্তব্য, দেশের মানুষ শ্বাস নিতে চায়, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি নয়। টুইটের সঙ্গে দু’টি ছবি পাশাপাশি দিয়েছেন তিনি। একটিতে খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার ভরানোর জন্য অসহায় মানুষের দীর্ঘ লাইন। অন্যটিতে নির্মীয়মাণ আলোকজ্জল ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা’ প্রকল্প। প্রসঙ্গত এই কাজটিকে জরুরি পরিষেবার আওতায় এনে লকডাউনের মধ্যেই কাজ করাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্পের মোট খরচ কুড়ি হাজার কোটি টাকা।
অতিমারির চরম সঙ্কটের সময়ে এই প্রকল্প চালু রাখা নিয়ে প্রবল প্রতিবাদ ওঠায়, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী বলেছেন, “কুড়ি হাজার কোটি টাকা মোট খরচ ঠিকই। কিন্তু পুরো টাকাটা এখনই খরচ হচ্ছে না, আগামী কয়েক বছর ধরে তা খরচ হবে।”
কোভিড মোকাবিলার প্রশ্নে অবশ্য গোড়া থেকেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রতিষেধকের জোগান থেকে লকডাউন নীতি, ধারাবাহিক ভাবে টুইট করে সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তিনি এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। আজ রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে মোদীকে চিঠি লিখে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার রণকৌশল তৈরির জন্য অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন। উদ্দেশ্য, ঐক্যবদ্ধ ভাবে কোভিড-জয়ের রাস্তা খোঁজা।
চিঠিতে তীব্র ভাষায় খড়্গে লিখেছেন, “জাতীয় স্তরে এক অভূতপূর্ব লড়াই লড়ছেন সাধারণ মানুষ। দেখে মনে হচ্ছে কেন্দ্র যেন তার কর্তব্য থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মানুষকে বাধ্য করছে তাঁদের প্রিয়জনদের বাঁচানোর জন্য জমি, বাড়ি, গয়না বেচে দিতে, ব্যাঙ্কের পুঁজির সবটুকু খুইয়ে ফেলতে।” তাঁর কথায়, সরকারি গাফিলতিতে দেশের নাগরিকদের যে যুদ্ধ লড়তে হচ্ছে, তার থেকে মানুষকে বাঁচাতে কোভিড মোকাবিলায় যৌথ ভাবে সর্বসম্মত পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খড়্গের অনুরোধ, টিকাকরণের জন্য যে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা যেন সর্বাংশে মানুষের কাজে লাগে। এই কর্মসূচিতে যেন দেশের সব নাগরিককেই যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক দেওয়া হয়।
বাজারে আরও প্রতিষেধক আনার ক্ষেত্রে সরকার কী কী ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে, সে ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে কয়েকটি প্রস্তাব রেখেছেন খড়্গে। তাঁর অনুরোধ, দেশে টিকার উৎপাদন বাড়াতে লাইসেন্স দেওয়ার নিয়মকানুন শিথিল করা হোক, খুব প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের উপর থেকে কর মকুব করা হোক। খড়্গের প্রস্তাব, “প্রতিষেধকের উপর থেকে ৫%, পিপিই কিটের উপর ৫ থেকে ১২%, অ্যাম্বুল্যান্সের উপর ২৮% এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের উপর থেকে ১২% কর-ভার লাঘব করা হোক’।
বিদেশি অর্থ, টিকা, আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জামের বিলিবণ্টন যত দ্রুত সম্ভব করারও অনুরোধ জানিয়েছেন খড়্গে। কাজ হারিয়েছেন এমন মানুষদের জন্য কেন্দ্রের গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা যোজনা প্রকল্পে মজুরির পরিমাণ ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy