গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রি-এম্পটিভ নন-মিলিটারি স্ট্রাইক। জইশ ঘাঁটি ধ্বংস করতে ভারতীয় বায়ুসেনার সফল অভিযানকে এই শব্দবন্ধ দিয়েই ব্যাখ্যা করেছে ভারত। অর্থাৎ প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক অভিযান। কিন্তু এই ধরনের আক্রমণ বলতে কী বোঝায়? এর আগে কখনও পৃথিবীতে এই ধরনের আক্রমণ হয়েছে কি? সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক ভোর রাতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় ভারতের আক্রমণ এবং তা নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার ঘটনাক্রম।
শুরুতে ধোঁয়াশা থাকলেও এখন স্পষ্ট আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে পাকিস্তানের প্রায় ২৩ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে জইশ ঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। আক্রমণের পর শুরুতে নীরব ছিল ভারত। প্রথম এই হামলার কথা জানায় পাকিস্তানই। ভারতীয় সময় সকাল পাঁচটা বেজে ১২ মিনিটে প্রথম বিষয়টি সামনে আনেন পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর।
টুইট করে তিনি জানান, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পাকিস্তানে ঢুকেছে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। পাকিস্তানি বায়ুসেনার পাল্টা আক্রমণে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে গিয়েছে।’
Indian Air Force violated Line of Control. Pakistan Air Force immediately scrambled. Indian aircrafts gone back. Details to follow.
— DG ISPR (@OfficialDGISPR) February 25, 2019
এর ঠিক পরেই ভারতীয় সময় সকাল সাতটা বেজে ছয় মিনিটে আবার টুইট করেন আসিফ গফুর। সেখানে তিনি জানান, ভারতীয় বায়ুসেনা বোমাবর্ষণ করেছে মুজফফরাবাদ সেক্টরে।
Indian aircrafts intruded from Muzafarabad sector. Facing timely and effective response from Pakistan Air Force released payload in haste while escaping which fell near Balakot. No casualties or damage.
— DG ISPR (@OfficialDGISPR) February 26, 2019
আরও পড়ুন: ২০ বছর পর বদলা! পাকিস্তানে ঢুকে কন্দহর বিমান হাইজ্যাকের মূল চক্রীকে নিকেশ করল বায়ুসেনা
পাকিস্তান সেনার তরফে একের পর এক প্রতিক্রিয়া জানানো হলেও শুরুতে কিছুই জানায়নি ভারত। সকাল সাড়ে ১১টায় বিদেশ সচিব প্রথম জানান, এই আক্রমণ আসলে ‘প্রি-এম্পটিভ নন-মিলিটারি স্ট্রাইক’, বাংলা তর্জমা করলে যা দাঁড়ায়, প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক অভিযান। এই শব্দবন্ধের মানে কী, তা নিয়েই উঠতে থাকে নানা প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ‘গাছের উচ্চতায় নেমে গিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে ভারতের যুদ্ধবিমান মিরাজ ২০০০’
সামরিক অভিযানে এই শব্দবন্ধের খুব একটা নজির নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে এই শব্দের ব্যবহার খুব কমই আছে। সাধারণত ইজরায়েল এবং আমেরিকাই এই ধরনের আক্রমণ করে থাকে।
ধরা যাক, ভারতের ওপর হামলা চালাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে শত্রু দেশের কোনও নির্দিষ্ট শিবিরে। সেই শিবির সম্বন্ধে নির্দিষ্ট খবর আছে ভারতের কাছে। সেই শিবির ধ্বংস করতেই যে আক্রমণ, তাকেই বলা হচ্ছে প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক অভিযান বা প্রি এম্পটিভ নন-মিলিটারি স্ট্রাইক। অসামরিক অভিযান, কারণ এই আক্রমণ পুরোদস্তুর যুদ্ধের ঘোষণা নয়। শুধু মাত্র সুনির্দিষ্ট ঘাঁটি বা জঙ্গিশিবির ধ্বংস করতেই এই হামলা। এবং তাও করা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের হামলায় জঙ্গি ঘাঁটি ছাড়া এমন কোনও জায়গায় হামলা চালানো হয়না, যা সাধারণ মানুষের ক্ষতি করতে পারে। অর্থাৎ, সুযোগ থাকলেও সুনির্দিষ্ট জঙ্গি ঘাঁটিকেই নিকেশ করা হয়, সাধারণ বসতি বা বিপক্ষের কোনও আইনমাফিক সামরিক ঘাঁটিকে নয়।
এখনও পর্যন্ত ইজরায়েল এবং আমেরিকাই এই ধরনের আক্রমণ করে এসেছে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হল ভারতও। ভারত এই ধরনের আক্রমণ এই প্রথম করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy