Advertisement
E-Paper

কেউ কেউ নিজেকে সকলের ‘বস্’ ভাবেন, ভারতের উত্থান মানতে পারেন না! নাম না-করে ট্রাম্পকেই নিশানা নয়াদিল্লির

আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক ঘিরে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। ভারতীয় পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। প্রথমে ২৫ শতাংশ, তার পরে সেটি বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ১৭:২০
(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে খোঁচা দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার সেই মন্তব্যের বিপরীতে ভারতের অর্থনীতির দ্রুত উত্থানের কথা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু তা-ই নয়, মোদীর মন্ত্রিসভার প্রথম সারির সদস্য রাজনাথ সিংহ আরও এক ধাপ এগিয়ে নাম না-করেই খোঁচা দিলেন ট্রাম্পকে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের কথায়, কেউ কেউ নিজেকে সকলের ‘বস্‌’ ভাবেন। তাঁরা ভারতের দ্রুত উত্থানকে মেনে নিতে পারেন না।

ভারতীয় পণ্য যাতে বিদেশে বিক্রি না-হয়, একাংশের মানুষ সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রাজনাথের। সরাসরি কারও নাম না নিলেও অনেকেই মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই নিশানা করেছেন তিনি। আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক ঘিরে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। ভারতীয় পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। প্রথমে ২৫ শতাংশ, তার পরে সেটি বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মূলত, রাশিয়ার সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণেই ট্রাম্পের এই অসন্তোষ। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনাও আপাতত বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কূটনৈতিক এই টানাপড়েনের আবহে রাজনাথের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

রবিবার মধ্যপ্রদেশে এক কর্মসূচিতে রাজনাথ বলেন, “কেউ কেউ আছেন, যাঁরা ভারতের দ্রুত উন্নতি দেখে খুশি হতে পারছেন না। তাঁরা এটি পছন্দ করছেন না। (তাঁরা ভাবেন), সকলের ‘বস্‌’ তো আমি, তা হলে ভারত কী ভাবে এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে? অনেকেই চেষ্টা করছেন যাতে, ভারতীয়দের হাতে তৈরি জিনিস সেই সব দেশের তৈরি জিনিসপত্রের চেয়ে বেশি দামি হয়ে যায়। ওই জিনিসগুলির দাম বেড়ে গেলে, সেগুলি আর বিশ্ববাসী কিনতে চাইবেন না। এই চেষ্টাই চলছে। কিন্তু আমি পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, কেউই ভারতকে বিশ্বের একটি বড় শক্তি হয়ে ওঠা থেকে আটকাতে পারবে না।”

একই দিনে বেঙ্গালুরুতে অন্য এক অনুষ্ঠানে ভারতের অর্থনীতির দ্রুত উত্থান নিয়ে মন্তব্য করেন মোদীও। তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত তৃতীয় অর্থনীতির দেশ হিসাবে পরিচিতি পাওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এই গতি এসেছে আমাদের কাছে সংস্কার, কর্মক্ষমতা এবং পরিবর্তনের ভাবনা থেকে। আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং সৎ প্রচেষ্টা থেকে এই গতি এসেছে।”

ভারত এবং আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার মাঝেই হঠাৎ খেই হারায় দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায়। ট্রাম্পের দাবি, ভারতকে তেল বিক্রি করে রাশিয়া যে লাভ করছে, সেই টাকা তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যবহার করছে। অর্থনীতির বিষয়ে মস্কো এবং নয়াদিল্লিকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ শানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ভারত এবং রাশিয়া— দু’দেশেরই অর্থনীতি মৃত। সম্প্রতি বার বার ভারতের উপর নিজের অসন্তোষ স্পষ্ট করেছেন তিনি। যদিও নয়াদিল্লিও শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেশের স্বার্থের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না।

রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়েও নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় পণ্যের উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তকে অন্যায্য এবং অযৌক্তিক বলে ব্যাখ্যা করেছে মোদী সরকার। আমেরিকারও যে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট করেছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে আমেরিকা পারমাণবিক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালাডিয়াম, বিবিধ সার এবং রাসায়নিক কেনে।

US Tariff Donald Trump Rajnath Singh India US Tariff War
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy