প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। —শাটারস্টক।
কোথাও যেতে হয়নি, কোনও কাজ করতে হয়নি। শুধু ভিক্ষার ঝুলিটি নিয়ে শহরের এক ব্যস্ত মোড়ে বসে থেকেছেন। তাতেই গত দেড় মাসে আড়াই লক্ষ টাকা উপার্জন হয়েছে তাঁর। নিজেই স্বীকার করেছেন ইনদওরের এক মহিলা।
গত বুধবার তাঁকে এবং তাঁর আট বছরের কন্যাকে মধ্যপ্রদেশের ইনদওর শহরের ভওয়রাসলা স্কোয়্যার থেকে ‘উদ্ধার’ করেছে পুলিশ। ইনদওর-উজ্জয়িনী রোডের এই মোড়টি লব-কুশ স্কোয়্যার নামেই বেশি পরিচিত। জেলাশাসক আশিস সিংহের নির্দেশে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। সেই অভিযানেই এই মহিলা এবং তাঁর কন্যাকে ‘উদ্ধার’ করে তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা নিজে থেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ৪৫ দিন ধরে এই এলাকায় ভিক্ষা করছেন তিনি। আর এই ৪৫ দিনে তিনি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এর মধ্যে ১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন বাড়িতে। রাজস্থানে যে বাড়িতে তাঁর আরও দুই সন্তান মানুষ হচ্ছে তাদের ঠাকুরদা এবং ঠাকুমার কাছে। বাকি দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজ়িট করেছেন। ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন ব্যক্তিগত কারণে। যদিও কোন খাতে সেই খরচ হয়েছে, তা পুলিশকে জানাননি।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার যখন পুলিশ ওই মহিলাকে ‘উদ্ধার’ করে তখন তাঁর কাছে ছিল ১৯ হাজার ২০০ টাকা। পুলিশকে মহিলা জানিয়েছেন, ওই টাকা তিনি উপার্জন করেছেন গত ৭ দিনে। এ ছাড়া তাঁর আট বছরের কন্যাও গত বুধবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপার্জন করেছে ৬০০ টাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, উজ্জয়িনী শহরেই এই মহিলা তাঁর স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষা করেন। যাঁর মধ্যে শুধু মহিলারই উপার্জন মাসে দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষ টাকা। হিসাব করে দেখা গিয়েছে, ওই মহিলার বার্ষিক আয় অন্তত ২০ লক্ষ টাকা। (পরিসংখ্যান বলছে দেশের মোট করদাতাদের মাত্র ১.৩ শতাংশ বছরে ২০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি উপার্জন করেন) যা যে কোনও কর্পোরেট চাকরির বেতনের থেকেও বেশি। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিভিন্ন শহরে এই পরিবারটির জমি, বাড়ি, গাড়িও রয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র এমনকি, স্মার্টফোনও।
প্রসঙ্গত, ইনদওরে এই মুহূর্তে ৭০০০-এরও বেশি মানুষ ভিক্ষাবৃত্তি করে উপার্জন করেন বলে জানতে পেরেছে স্থানীয় প্রশাসন। তারা এ-ও জানতে পেরেছে যে, এই ৭০০০ ভিক্ষুক ইনদওরের ৯৮.৭ শতাংশ মানুষের থেকে বেশি উপার্জন করেন। বেশ কিছু দিন ধরেই মধ্যপ্রদেশ সরকার শহরগুলিকে ভিক্ষুক মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বুধবার সেই সূত্রেই পুলিশি অভিযান চালানো হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, আট বছরের ওই শিশুকন্যাকে শিশুদের হোমে পাঠানো হয়েছে। ওই মহিলার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy