Advertisement
E-Paper

কী যে খাবার দেন, মুখেই তোলা যায় না

দিল্লি থেকে গুয়াহাটি যেতে হলে বিমানেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন দিল্লির এক দম্পতি। মঙ্গলবার অবশ্য নয়াদিল্লি থেকে ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন কপিল ও মধুছন্দা। রাতের খাবারের ফয়েলে মোড়া শক্ত রুটি, আর টকে যাওয়া পনিরের দুর্গন্ধ পেয়ে মুখে তুলতে পারেননি। প্ল্যাটফর্ম থেকে খাবার কিনতে হয়েছে তরুণ দম্পতিকে।

যাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রি কারে গিয়ে কর্মীদের ভর্ৎসনা করছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকেরা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

যাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রি কারে গিয়ে কর্মীদের ভর্ৎসনা করছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকেরা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০৩:০৭
Share
Save

দিল্লি থেকে গুয়াহাটি যেতে হলে বিমানেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন দিল্লির এক দম্পতি। মঙ্গলবার অবশ্য নয়াদিল্লি থেকে ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন কপিল ও মধুছন্দা। রাতের খাবারের ফয়েলে মোড়া শক্ত রুটি, আর টকে যাওয়া পনিরের দুর্গন্ধ পেয়ে মুখে তুলতে পারেননি। প্ল্যাটফর্ম থেকে খাবার কিনতে হয়েছে তরুণ দম্পতিকে।

ব্যবসার কাজে মাঝেমধ্যেই দিল্লি থেকে অসমে যেতে হয় অরবিন্দ মেটাকে। পুরনো দিল্লির বাসিন্দা অরবিন্দ রাজধানী এক্সপ্রেসেই যাতায়াত করেন। প্রতিবারই একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। দিনের বেলায় শৌচাগারের আশেপাশে ‘উটকো লোক’। রাতেও দুই কামরার সংযোগস্থলে বাইরের লোকজনকে বসে থাকতে দেখেছেন। অভিযোগ করেও ফল মেলেনি।

বুধবার সকাল থেকে এসি-টু টিয়ার কামরার ‘অ্যাটেনডেন্ট’কে অ‌ন্তত তিন বার কামরা পরিষ্কার করতে বলেছেন। কোনও বারই সাড়া পাননি। মঙ্গলবার রাতে বিছানার চাদর ময়লা দেখে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বদলে দেওয়া চাদরও গায়ে তুলতে পারেননি তিনি।

দিল্লি থেকে ডিব্রুগড়, প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া রাজধানীর কামরায় সাধারণ যাত্রীদের এমন অভিজ্ঞতার কথা লিখতে বসলে পাতার পর পাতা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু, এ সব নথিভুক্ত করার জন্য খাতাই যে পাওয়া যায় না! রেলের কেউ কখনও আসেন না যাত্রীদের সমস্যার কথা জানতে। অথচ দূরপাল্লার অন্য সব ট্রেন তো দূর অস্ত, এমনকী রাজধানীর মতো ট্রেনেও রেলের পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভের অন্ত নেই। কখনও খাবারের মান খারাপ, কখনও কামরায় ইঁদুর ঢুকে রাতের ঘুমের বারোটা বাজানো, কখনও অপরিষ্কার শৌচাগার তো কখনও কালচে ছোপ পড়ে যাওয়া বালিশ-চাদর—রাজধানীতে চাপা যাত্রী মাত্রই কখনও না কখনও এই অভিজ্ঞতার সামনে পড়েছেন। কিন্তু, রেল কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না বলেও অভিযোগ যাত্রীদের। ক্বচিৎ-কদাচিৎ ক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশনে নেমে বিক্ষোভ দেখালে তখন কিছুটা নড়েচড়ে বসেন রেল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সকালে নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে থামতেই ‘অন্য’ অভিজ্ঞতা হল এসি-টু টিয়ারের একটি কামরার যাত্রীদের। রেলমন্ত্রীর গুঁতোয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনে উঠে বা স্টেশন পরিদর্শন করে যাত্রী পরিষেবার হাঁড়ির হালের খোঁজ নিতে হচ্ছে শীর্ষ রেল কর্তাদের। রেল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, রাজধানীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে যাত্রীদের অভিযোগ শুনে অস্বস্তিতে পড়তে হবে না বলেই মনে করেছিলেন আধিকারিকদের একাংশ। তাই সংবাদমাধ্যমের সামনে রেল-পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের মতামত শোনার জন্য রাজধানী এক্সপ্রেসকেই বেছে নিয়েছিলেন। ওই কামরায় উঠে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল, নিউ জলপাইগুড়ির স্টেশন ম্যানেজার অজিতেশ দাস, কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর দেবাশিস কার্জি-সহ বিভিন্ন পদস্থ আধিকারিক। তাঁরা যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলেন, রেলের খাবার, পরিচ্ছন্নতা সব ঠিক আছে কিনা।

আর প্রশ্ন করতেই ধেয়ে এল অভাব-অভিযোগের গোলাগুলি!

রেল কর্তাদের শুনতে হল, ‘‘কী খাবার দেন আপনারা, মুখে তোলা যায় না! বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়েছে।’’ অস্বস্তিতে পড়ে ‘প্যান্ট্রি কারে’র কর্মী-আধিকারিকদের ভর্ৎসনা করতে হল রেলকর্তাদের। নয়াদিল্লির দম্পতি কপিল-মধুস্মিতার কাছে রেল আধিকারিকেরা জানতে চান, ‘‘খানা ঠিকঠাক থা?’’ কপিল বলেন, ‘‘খাওয়া তো মুখেই তোলা যায় না!’’ মধুস্মিতা জানান, তাঁরা বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনেছেন। আর এক যাত্রী অরবিন্দ মেটা বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্টেশনে উটকো লোক কামরায় উঠে পড়ছে। আমাদের নিরাপত্তার কী হবে?’’ যাত্রীদের কেউ অভিযোগ করেছেন, প্রাতরাশে অন্যরা জ্যাম পেলেও, তিনি পাননি। কেউ বা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আগে যে পরিষেবা মিলত, এখন তা-ও মেলে না। অথচ ভাড়া বাড়ছেই।’’

অস্বস্তির মুখে পড়ে পার্থবাবু বলেন, ‘‘অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা সব বিষয়গুলি কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। স্টেশনেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

Anirban Ra Railway officer North-East division Train compartment Delhi Rajdhani express

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।