এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে উড়ান সংস্থার কর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। গুজরাতের অহমদাবাদে সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত গ্রাউন্ড স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
প্রতিবেদনে তদন্তকারীদের এক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এআই ১৭১ বিমানটি ওড়ার আগে সেটির দেখাশোনার কাজে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বিমানটি ওড়ার সবুজ সঙ্কেত যে কর্মীরা দিয়েছিলেন, এমন বেশ কয়েক জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দাবি ওই সূত্রের। মোবাইলগুলি যাচাই করে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা, এমনই দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী ওই বিমানটি অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়ানের কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। তিনিও ওই বিমানেই ছিলেন।
বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা ওই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। ‘এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (এএআইবি) দুর্ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। তাদের সাহায্য করছে গুজরাত পুলিশ, ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (এএআই) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড’ (এনটিএসবি)-ও আন্তর্জাতিক উড়ান বিশেষজ্ঞদের দুর্ঘটনাস্থলে নিয়ে এসে পৃথক ভাবে একটি তদন্ত চালাচ্ছে। বোয়িংয়ের এই ড্রিমলাইনার বিমানটি আমেরিকায় তৈরি হয়েছিল। সেই কারণেই ইন্টারপোলের প্রোটোকল মেনে স্বতন্ত্র তদন্ত চালাচ্ছে এনটিএসবি।
তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সূত্রের ভিত্তিতে ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, “বিমানটি ওড়ার সবুজ সঙ্কেত যাঁরা দিয়েছিলেন, তাঁদের কয়েক জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।” প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যে বিমানবন্দর চত্বর থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে নাশকতার সম্ভাবনার তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর) এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) উদ্ধার করেছেন। কী কারণে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা জানতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে এগুলি থেকে। কোনও বিমানের ককপিটে কী কী শব্দ হচ্ছে, পাইলট কী কথা বলছেন, কোনও অ্যালার্ম বাজছে কি না তা রেকর্ড হয় সিভিআরে। এমনকি কোনও সুইচ টেপার শব্দ এবং ইঞ্জিনের শব্দও ধরা পড়ে এতে। অন্য দিকে, কোনও বিমান কত গতিতে যাচ্ছে, কোন উচ্চতায় রয়েছে, এমন আরও বিভিন্ন তথ্য ডিএফডিআরে ধরা পড়ে।