স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল বছর পনেরোর দিব্যাংশী। কিন্তু জানতে পারে যে, কোহলিরা শহরে আসছেন। চিন্নাস্বামীতে আইপিএলের জয়োৎসব পালিত হবে। তখনই মায়ের কাছে আবদার করেছিল, স্কুলে যাবে না সে। বরং কোহলি এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) অনুষ্ঠান দেখতে যেতে চায় সে। কোহলির বড় ভক্ত দিব্যাংশী। কন্যার আবদার শুনে মা রাজি হয়ে যান।
বুধবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আরসিবি-র বিজয়োৎসব পালিত হয়। কন্যার আবদার মেনে তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন অশ্বিনী। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে যখন আমাকে বলল, আমি ওর আবদার ফেরাতে পারলাম না। এর আগে ও আপ্পুকে (পুনীত রাজকুমার) দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু ওর সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি।’’ অশ্বিনী আরও বলেন, ‘‘এ বার যখন দিব্যাংশী আমার কাছে বিরাটকে দেখার আবদার করল, ওকে নিরাশ করতে চাইনি। বিরাটকে কাছ থেকে দেখিয়ে এই দিনটাকে ওর জীবনে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাগ্যে যে অন্য কাহিনি লেখা রয়েছে, কে জানত।’’
অশ্বিনী জানিয়েছেন, বোন এবং দিব্যাংশীকে নিয়ে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের উদ্দেশে রওনা দেন। স্টেডিয়ামে ঢোকার কোনও পরিকল্পনা ছিল না তাঁদের। কিন্তু সেখানে পৌঁছোতেই ভিড়ের ধাক্কায় তাঁরা ছিটকে আলাদা হয়ে যান। অশ্বিনীর কথায়, ‘‘ভিড়ের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিলাম। কোনও রকমে বেরিয়ে এসেছিলাম। আশপাশে বোন এবং আমার মেয়েকে দেখতে না পেয়ে ভেবেছিলাম ওরা স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢুকেছে। কিন্তু কিছু পরেই বোন আমাকে ফোন করে জানায়, দিব্যাংশীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছে।’’ তার পরই তিনি শোনেন পদপিষ্ট হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তখনও কল্পনা করতে পারেননি সেই তালিকায় তাঁর মেয়ে দিব্যাংশীও রয়েছে। কিছু পরেই যখন এক এক করে নিথর দেহগুলি বার করা হচ্ছিল, তখন সেখানে নিজের মেয়েকে দেখতে পান অশ্বিনী।
তিনি বলেন, ‘‘এমনটা হবে কে জানত। মেয়েকে স্টেডিয়ামে নিয়ে আসা উচিত হয়নি আমার। তা হলে আজ মেয়েকে হারাতে হত না।’’ প্রসঙ্গত, গত বুধবার আরসিবির বিজয়োৎসবে পদপিষ্টে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।