Advertisement
E-Paper

মাল্যকে পাওয়া লম্বা পথ, আশা জাগানোই সার

ভিষেক মনু সিঙ্ঘভী অথবা কপিল সিব্বলের মত নেতারা প্রশ্ন তুলছেন, নরেন্দ্র মোদী কি সত্যিই চান মাল্য ফিরে আসুক? সিবিআই এবং ইডি-র যে সব কর্তা বিষয়টি দেখছেন, এই মামলার জট খোলার মতো পারদর্শিতা কি তাঁদের আছে?

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৪:০৬
বিজয় মাল্য

বিজয় মাল্য

খুব নাটকীয় কিছু না ঘটলে মোদী সরকার তার চলতি মেয়াদে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে না বিজয় মাল্যকে। ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপের মামলায় অভিযুক্ত মাল্যকে দেশে আনার প্রশ্নে বিদেশ মন্ত্রক মাঝে-মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করে আশা জিইয়ে রাখার

চেষ্টা করছে। জানাচ্ছে ওয়েস্টমিনস্টার আদালতে মামলার অগ্রগতির কথা। বিরোধী দলগুলির সমালোচনা রুখতে ব্রিটেনের সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্যের কথাও জোর গলায় বলছে মোদী সরকার। কিন্তু কূটনৈতিক তৎপরতা অথবা ব্রিটেন সরকারের উপর
চাপ দেওয়ার উপরে আদৌ নির্ভর করছে না বিষয়টি। গোটা প্রক্রিয়া এখন ব্রিটেনের বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। আগামী দু’বছরের মধ্যে যার ফয়সালা হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না বলে বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ সূত্র জানাচ্ছে।

কংগ্রেস অবশ্য প্রশ্ন তুলছে মাল্য প্রশ্নে মোদী সরকারের আন্তরিকতা নিয়েই। অভিষেক মনু সিঙ্ঘভী অথবা কপিল সিব্বলের মত নেতারা প্রশ্ন তুলছেন, নরেন্দ্র মোদী কি সত্যিই চান মাল্য ফিরে আসুক? সিবিআই এবং ইডি-র যে সব কর্তা বিষয়টি দেখছেন, এই মামলার জট খোলার মতো পারদর্শিতা কি তাঁদের আছে? যে নথিপত্র তাঁরা দিচ্ছেন, তা কি যথেষ্ট?

এ সব নিয়ে রাজনীতির তরজা যা-ই হোক, এটা ঘটনা যে সিবিআই বা ভারতীয় তদন্তকারী অফিসারদের হাতে বিষয়টি আর নেই। গত সপ্তাহে শুনানির জন্য মাল্য আদালতে হাজির হয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু, সেটা ছিল নিছকই ‘কেস ম্যানেজমেন্ট রিভিউ’ অর্থাৎ কোনও মামলা শুরুর আগের সলতে পাকানো মাত্র। আগামী ৬ জুলাই এই ‘রিভিউ’-এর দ্বিতীয় পর্ব। সে দিন মাল্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে না। আপাতত স্থির আছে এই প্রত্যর্পণ মামলার প্রথম শুনানি হবে ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু মাল্যের আইনজীবী চেষ্টা করছেন বিষয়টিকেও আরও পিছিয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিলে নিয়ে যাওয়ার। এবং সেটাই হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট।

প্রথম শুনানিতেই মাল্যকে দোষী সাব্যস্ত করে ব্রিটেন থেকে ভারতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে— বিষয়টি আাদৌ এ রকম নয়। মামলা চলতে পারে অনির্দিষ্টকাল। ধরে নেওয়া যাক তাতে মাল্য হেরে গেলেন। কিন্তু সেখানেই খেলা শেষ নয়। এর পর তিনি আবেদন করতে পারেন লন্ডনের হাইকোর্ট, তার পরে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রিভি কাউন্সিল অব ইউনাইটেড কিংডম-এ। সর্বত্র মামলার পরে তাঁর বিরুদ্ধে যদি প্রত্যর্পণের নির্দেশই বহাল হয়, সে ক্ষেত্রে আদলত থেকে বিষয়টি যাবে সরকারের সেক্রেটারি অব স্টেটের কাছে। অর্থাৎ শেষ সিদ্ধান্তটি নেওয়া হবে রাজনৈতিক ভাবে। সে সময়ে ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কী রকম থাকবে, তার উপরে নির্ভর করবে সিদ্ধান্ত।

আর একটি বিষয়, ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণের ইতিহাসটি মোটে উজ্জ্বল নয়। ভারত-ব্রিটেন প্রত্যর্পণ চুক্তি হয় ১৯৯৩-এ। ২৪ বছরে মাত্র এক জনকেই ফেরত পাঠিয়েছে ব্রিটেন। গুজরাত দাঙ্গায় অভিযুক্ত সমীরভাই ভিনুভাই পটেলকে গত বছর ফেরত পাঠানো হয়। তার আগের কয়েক বছরে ছ’জনের প্রত্যর্পণের অনুরোধ খারিজ করেছে ব্রিটেন। মাল্য ছাড়াও আরও ন’জনকে প্রত্যর্পণের আর্জি ঝুলে আছে এখন।

Vijay Mallya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy