ছবি: পিটিআই।
সমালোচনা চলছিল প্রথম দিন থেকেই। ‘তুঘলকি ফরমানে’ সাধারণ মানুষের হয়রানি, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্স আটকে তল্লাশির জেরে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছিল। সার্বিক চাপের মুখে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপালের প্রশাসন আজ জানিয়েছে, জম্মু-শ্রীনগর সড়কে অসামরিক গাড়ির চলাচলের উপরে জারি হওয়া পুরনো নিষেধাজ্ঞা আগামী ২২ এপ্রিল থেকে আংশিক ভাবে শিথিল করা হচ্ছে।
পুলওয়ামা হামলার আবহে লোকসভা ভোটে কাশ্মীরে বাহিনী মোতায়েনের কথা ভেবে গত ৭ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার। তাতে বলা বলা হয়েছিল, জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে (৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক) প্রতি বুধ ও রবিবার ভোর ৪টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শুধুমাত্র সেনা ও আধাসেনার গাড়িই চলবে। বিশেষ অনুমতি ছাড়া এই সময়সীমার মধ্যে কোনও অসামরিক গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এই কড়াকড়ি থাকবে বলেও জানানো হয়েছিল।
আজ সেই নিয়মই কিছুটা পাল্টানো হয়েছে। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, ২২ এপ্রিল থেকে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের শ্রীনগর থেকে বারামুলা পর্যন্ত অংশে শুধুমাত্র প্রতি রবিবারেই অসামরিক গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
বুধবারে সব গাড়িই চলাচল করতে পারবে। তবে সড়কটির শ্রীনগর থেকে উধমপুর পর্যন্ত অংশে পুরনো নিষেধাজ্ঞাই জারি থাকছে। অর্থাৎ ওই অংশে এখনও বুধ ও রবিবার ভোর থেকে সন্ধে অসামরিক গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
সাধারণ মানুষের হয়রানির অভিযোগই শুধু নয়, জম্মু-শ্রীনগর সড়কে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণের প্রভাব পড়েছিল বাণিজ্যেও। বিশেষত আপেল রফতানিতে। দিল্লির আপেল ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি মেঠারাম কৃপালনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আপেলচাষিরা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সপ্তাহে মাত্র দু’দিন কাশ্মীরি আপেলের ট্রাক এসে পৌঁছতে পারছে দিল্লিতে। দেখা যাচ্ছে, সেই ট্রাকগুলোর প্রায় ৪০ শতাংশ আপেলই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
কাশ্মীরের একমাত্র চালু ব্যবসা বলতে আপেলের ব্যবসা। কিন্তু হাইওয়েতে এই কড়াকড়ির ফলে সেই ব্যবসাই উঠে যেতে বসেছে।’’ আপেলের ট্রাককে জম্মু-শ্রীনগর সড়কে দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে বলে চালকদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন। এতে শুধু কাশ্মীরিরা নন, আগাম টাকা দিয়ে বসে থাকা দিল্লির ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কৃপালনীর কথায়, ‘‘প্রাকৃতিক কারণে এই সড়ক বছরের অনেকটা সময় বন্ধ থাকে। অন্তত যেটুকু সময় আমাদের হাতে রয়েছে, তা বিবেচনা করে রাজ্যপাল এই মানুষগুলোকে বাঁচান।’’
আজ সরকারি মুখপাত্র যদিও দাবি করেন, আমজনতার অসুবিধা এড়াতে বাস্তব পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছিল আগেও। তিনি জানান, গত ১৭ এপ্রিল ছিল বুধবার।
অর্থাৎ বাহিনীর কনভয় চলাচলের দিন। কিন্তু সে দিন কনভয় যাতায়াতের প্রয়োজন ছিল না।। তাই সে দিন কোনও বিধিনিষেধ জারি করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘‘১১ এপ্রিল বারামুলা ও জম্মুতে এবং ১৮ এপ্রিল শ্রীনগর ও উধমপুরে ভাল ভাবেই ভোট হয়েছে। এখন বাহিনীকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ক্রমশ কমে আসছে। সেই কারণেই আজ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy