জঙ্গিদের ভয়ে কাজে যোগ দিচ্ছিলেন না জম্মু ও কাশ্মীরের এক পুলিশকর্মী। তাঁকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে প্রশাসন। সম্প্রতি এক মামলায় এমনটাই জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র প্রাণের ভয় রয়েছে বলে নিজের কর্তব্য থেকে পালিয়ে যাবেন— এটা একজন পুলিশকর্মীর থেকে আশা করা যায় না।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ পল্লি এবং বিচারপতি রজনীশ ওসওয়ালের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যে পুলিশকর্মী শুধুমাত্র জঙ্গিদের ভয়ে কাজে যোগ দিতে পারেন না, তাঁর কাছ থেকে সাধারণ নাগরিকদের জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষার বিষয়টি আশা করা যায় না। নির্দেশনামায় আদালত লিখেছে, “যে পুলিশ আধিকারিক শুধুমাত্র জঙ্গিদের ভয়ে কাজ যোগ দেন না, তাঁর কাছ থেকে দেশের নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করার আশা করা যায় না। এক জন পুলিশকর্মী শুধু নিজের প্রাণের ভয়ে দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাবেন, এটা আশা করা যায় না।” বাহিনীর সদস্য হিসাবে ওই পুলিশকর্মীর এমন আচরণ ‘অশোভন’ বলেও জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্ট।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ বাহিনী থেকে ছাঁটাই হওয়া ওই ব্যক্তি ১৯৮৭ সালে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। প্রথম তিন বছর কাজ করার পরে ১৯৯০ সালের জুনে ‘আর্নড লিভ’ নিয়ে ছুটিতে চলে যান তিনি। ওই বছরেরই ১৫ অগস্টে তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কাজে ফেরেননি। পরে বাহিনী থেকে তাঁকে একাধিক বার নোটিস পাঠানো হলেও কাজে ফেরেননি ওই ব্যক্তি। এর পরে ১৯৯১ সালের মে মাসে তাঁকে পুলিশ বাহিনী থেকে সরিয়ে দেয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন:
প্রশাসনের ওই পদক্ষেপের প্রায় দু’দশক পরে ২০০৯ সালে আদালতে মামলা করেন ওই ব্যক্তি। বাহিনী থেকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথমে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর দাবি, জঙ্গিদের ভয়ে তিনি কাজে যোগ দিতে পারছিলেন না। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। পরে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল (সিএটি) হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি। সেখানেও মামলা খারিজ হয়ে যায়। শেষে জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি। কিন্তু সেখানেও মামলা খারিজ হয়ে যায়। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ওই ব্যক্তি মাত্র তিন বছর পুলিশ বাহিনীতে কাজ করেছেন। তার পর থেকে আর কাজে যোগ দেননি তিনি। একাধিক বার কাজে যোগে দেওয়ার জন্য নোটিসও পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। এ অবস্থায় ওই ব্যক্তির আচরণ শৃঙ্খলাভঙ্গের সমান বলেই মনে করেছে আদালত।