দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের তদন্তে উপত্যকা জুড়ে আজ ভোররাত থেকে তল্লাশি চালিয়ে মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।
শ্রীনগর, অনন্তনাগ, কুলগাম, পুলওয়ামা এবং বারামুলার ১৩টি জায়গায় এই তল্লাশি হয়েছে। সূত্রের খবর, এর মধ্যে কিছু জায়গার লোকজন বছর দুয়েক আগে তুরস্কে ছিল আদিল আহমেদের সঙ্গে। চিকিৎসক আদিলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সে অনলাইনে কাশ্মীরের যুবকদের জঙ্গি দলে শামিল এবং তাদের মগজধোলাই করত বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তবে আদিলের চক্রের যাদের ইতিমধ্যেই ধরা হয়েছে, তাদের কারও বাড়িতে এই তল্লাশি হয়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এক পুলিশ অফিসার বলেছেন, “দিল্লি বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকা জঙ্গিদের বৃহত্তর সংগঠন এবং তাদের নতুন সদস্যদের লক্ষ্য করে এই অভিযান।” তিনি জানিয়েছেন,আরও তল্লাশি এবং গ্রেফতারি হতে পারে।
দিল্লির বিস্ফোরণে দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে জঙ্গি সংগঠন কলকাঠি নেড়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। সেই সূত্রেই আজ পুলিশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স কাশ্মীর (সিআইকে) শাখা অভিযানটি চালায়। বাজেয়াপ্ত করা হয় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-সহ বিভিন্ন রকমের ২১টি ডিজিটাল ডিভাইস। সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সিআইকে-র নানা দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ধৃতদের।
এ দিকে, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) এক জন আইজি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে আজই বিকেলে শ্রীনগর বিমানবন্দরে নেমেছেন। তাঁরা এনআইএ-র শ্রীনগর শাখার সঙ্গে এই তদন্তে শামিল হবেন। ব্যবহৃত বিস্ফোরকের ধরন, জঙ্গিদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের পদ্ধতি এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য থেকে মনে করা হচ্ছে, এই বিস্ফোরণে আন্তর্জাতিক-যোগ রয়েছে। এই ঘটনার পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে এনআইএ।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের পুরনো চক্রের অবশিষ্টাংশ এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে যোগাযোগ ও আদানপ্রদানে সাহায্য করেছে। তাঁদের ধারণা, বিস্ফোরণের মাত্রা তুলনামূলক ভাবে মৃদু। তবে এর পিছনে রয়েছে কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী ও তার সঙ্গে জুড়ে থাকা আন্তর্জাতিক চক্রের সক্রিয়তা। তদন্তে যুক্ত এক আধিকারিকের কথায়, “এই তল্লাশি অভিযান বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকা বড় জঙ্গি-চক্রের পর্দা ফাঁসে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এনআইএ এখন তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কী ভাবে জঙ্গি মডিউল কাজ করছে, পিছনে কারা রয়েছে, দ্রুত তা স্পষ্ট হবে বলে আশা করছি।”
কাশ্মীর জুড়ে চলছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি। শ্রীনগর এবং পুলওয়ামার বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত চেক পয়েন্ট বসানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে ডিজ়িটাল নজরদারিও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)