জিগীষা ঘোষ হত্যা-কাণ্ড একটি বিরলতম ঘটনা। দিল্লির নিম্ন আদালতের বিচারক এমন মন্তব্য করেই ওই হত্যা-কাণ্ডের দুই দোষীকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন।
দিল্লির সাকেত আদালত সোমবার ওই সাজা শোনায়। দোষীরা হল রবি কপূর, অমিত শুক্ল এবং বলজিত্ মালিক। এদের মধ্যে রবি ও অমিতকে মৃত্যুদণ্ড এবং বলজিত্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সন্দীপ যাদব সোমবার বলেন, “যে বর্বরতার সঙ্গে কল সেন্টারের ওই কর্মীকে খুন করেছে দোষীরা, গুরুত্বের দিক থেকে তা বিরল থেকে বিরলতম একটি ঘটনা।” রায় শোনাতে গিয়ে বিচারক জানান, যদি এ ধরনের অপরাধীদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়, তা হলে সমাজের কাছে একটা ভুল বার্তা যাবে। সমাজকে রক্ষা করাই আইনের লক্ষ্য।
গত ১৪ জুলাই আদালত জানিয়েছিল, এটা স্পষ্ট যে ওই তিন ব্যক্তিই জিগীষাকে অপহরণের পর খুন করে তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল। এ দিন দিল্লি পুলিশের তরফেও আদালতের কাছে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানানো হয়েছিল। তারা আরও জানায়, যে নৃশংসতার সঙ্গে জিগীষাকে খুন করা হয় তা সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট ধরা পড়েছে। বলজিত্ এবং অমিত শুক্ল ইতিমধ্যেই সাত বছর জেল খেটেছে। মারণ রোগে ভুগছে, এই যুক্তি দেখিয়ে রবি কপূর আদালতের কাছে কম শাস্তির আবেদন জানিয়েছিল।
দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত বিহারে থাকতেন জিগীষা। কাজ করতেন নয়ডার একটি কল সেন্টারে। ২০০৯-এর ১৮ মার্চ রোজকার মতোই মাঝরাতে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। সংস্থার গাড়ি বাড়ির সামনে নামিয়ে দেওয়ার পর সেখান থেকেই রবি, অমিত ও বলজিত্ জিগীষাকে কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তাঁর এটিএম কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। বার বার নিজের প্রাণ ভিক্ষা করেছিলেন জিগীষা। কিন্তু তাতে কান দেয়নি দুষ্কৃতীরা।
তাঁর সর্বস্ব লুঠ করে নৃশংস ভাবে খুন করার পর দিল্লির বাইরে একটি ফাঁকা জায়গায় ঝোপের মধ্যে দেহ ফেলে রেখে পালায়। দু’দিন দিন পর অর্থাত্ ২০ মার্চ হরিয়ানার সুরজকুণ্ড থেকে জিগীষার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা তোলার সময় এবং শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করার সময় দুষ্কৃতীদের ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেছিল দিল্লি পুলিশ।
আরও খবর...
সব দিয়েও প্রাণভিক্ষা মেলেনি! জিগীষা ঘোষ হত্যায় দোষী সাব্যস্ত ৩