নবনির্মিত জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার আগে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। আর সমাজমাধ্যমে তাঁর পোস্ট করা ছবি দেখে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, তিনি সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করতে উদগ্রীব। রাজনীতিকদের মতে, আপাতত দিল্লির সঙ্গে সহযোগিতার নীতি নিয়ে চলতে চাইছেন ওমর তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতৃত্ব। সেই রাজনৈতিক সমীকরণেরই প্রতিফলন ঘটেছে এই বার্তালাপে।
আগামিকাল সকালে জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। এর ফলে সব ঋতুতে কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে যোগাযোগের পথ খুলে যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৬৫০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুড়ঙ্গ প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ। মূল সূড়ঙ্গ ছাড়াও রয়েছে দ্বিতীয় একটি সুড়ঙ্গ ও আশপাশের রাস্তা। ২০২৮ সালে জোজি লা সুড়ঙ্গও তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার ফলে কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে পথের দূরত্ব ৪৯ কিলোমিটার থেকে কমে হবে ৪৩ কিলোমিটার। অন্য দিকে গাড়ির গতিও ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার থেকে বেড়ে হবে ৭০ কিলোমিটার।
ফলে এক দিকে যেমন সুবিধে হবে সেনাবাহিনীর তেমনই অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগ বাড়বে। হবে আর্থিক বৃদ্ধিও। জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গের মাধ্যমে সোনমার্গের সঙ্গে যুক্ত হবে মধ্য কাশ্মীরের গান্ডেরবাল। ফলে স্কি রিসর্ট হিসেবে সোনমার্গের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
শনিবার সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন ওমর। পরে বেশ কিছু ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন তিনি। তার মধ্যে ছিল আকাশ থেকে তোলা ছবিও। সমাজমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জ়েড মোড় সুড়ঙ্গে সোনমার্গকে সারা বছর পর্যটকদের জন্য খুলে দেবে। ফলে সেখানে উন্নত মানের স্কি রিসর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। শীতকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের সোনমার্গ ছেড়ে সরে যেতে হবে না। কার্গিল ও লে থেকে শ্রীনগরে যাতায়াতের সময়ও কমবে।’’
জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমি এই সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি। পর্যটন ও স্থানীয় অর্থনীতির পক্ষে সুফলের কথা আপনি সঠিক
ভাবেই উল্লেখ করেছেন। আকাশ থেকে তোলা ছবিগুলি আমার খুবই ভাল লেগেছে।’’
উপত্যকার রাজনীতিকদের মতে, কিছু দিনের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পাবে বলে কেন্দ্রের কাছে আশ্বাস পেয়েছেন ওমর। এই পরিস্থিতিতে মোদীর সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিরোধী ইন্ডিয়া মঞ্চের সদস্য ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা হলেও শ্রীনগরের মসনদে বসার পর থেকে দিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই আগ্রহ দেখিয়েছেন ওমর। তাঁর বাবা ও প্রবীণ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাও জানিয়েছেন, ওমর সরকার দিল্লির সঙ্গে সংঘাতে যাবে না। বরং সহযোগিতার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)