ঘড়িতে তখন রাত ৩টে। নিজের বাসভবনে আদালত বসালেন দিল্লির পটীয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা আদালত শেফালি বার্নালা ট্যান্ডন। আর্থিক তছরুপ মামলায় এক অভিযুক্তের মুক্তি হবে কি না ইডি হেফাজতে পাঠানো হবে, তা-ই বিচার করতে বসেছিলেন তিনি। দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর বিচারক ট্যান্ডন অভিযুক্তকে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, স্বরাজ সিংহ যাদব নামে এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি অবৈধ ভাবে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল। বৃহস্পতিবার এই অভিযোগের সূত্র ধরে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ইডির দল। দিনভর তল্লাশি অভিযানের পর রাতে গ্রেফতার করা হয়। ২২ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া এক ব্যক্তির অভিযোগের পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তাঁর অভিযোগ, বরাদ্দ ফ্ল্যাট না-দিয়ে তা বিক্রি করে দিয়েছেন ৪০-৪৫ লক্ষ টাকায়! ইডির দাবি, বেআইনি ভাবে ফ্ল্যাট বিক্রি করার টাকায় ব্যক্তিগত সম্পত্তি বাড়িয়েছেন ওই প্রোমোটার। গ্রেফতারের পর পরই তাঁকে আদালতে হাজির করানোর আবেদন জানানো হয় ইডির তরফে।
ইডির আবেদনের ভিত্তিতে রাত ৩টে ৫ মিনিটে নিজের বাসভবনেই আদালত বসান বিচারক ট্যান্ডন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সওয়াল-জবাব চলে। বিচারক যখন নির্দেশ দেন তখন সকাল সাড়ে ৬টা। অভিযুক্তকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে তিনি শেষে জানিয়ে দেন, ইডি হেফাজত শেষে অভিযুক্তকে দুপুর ২টোয় আদালতে হাজির করাতে হবে।
আরও পড়ুন:
রাতে কোর্টের কাজকর্ম চলা নতুন নয়। সুপ্রিম কোর্টেও গভীর রাত পর্যন্ত শুনানি চলার নজির রয়েছে। সম্প্রতি আলোচনায় থাকা নিঠারি হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সুরীন্দ্রর কোলির ফাঁসি রদের আর্জির শুনানি হয় মধ্যরাতে। বাড়িতেই আদালত বসিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এইচএল দাত্তু। রাত দেড়টার সময় সুরীন্দ্রের ফাঁসির সাজা রদ করেন তিনি। এ ছাড়াও, ২০১৫ সালে ইয়াকুব মেননের ফাঁসির সাজা রদের আর্জির শুনানিও হয়েছিল মধ্যরাতে। যদিও ৯০ মিনিটের শুনানি শেষে মেননের আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।