Advertisement
E-Paper

ভয় পাই না এবিভিপি’কে! কার্গিল শহিদের মেয়ের তোপ ফেসবুকে

একেবারে ‘বাপ কা বেটি’! বেপরোয়া শত্রুর বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়ার স্পর্ধা আর অদম্য জেদে! বাবা লড়াইটা করেছিলেন কাশ্মীর সীমান্তের একেবারে ‘লাস্ট ফ্রন্টিয়ার’- কার্গিলে, শত্রু পাকিস্তানি হানাদারদের খাস ঘাঁটিতে। ’৯৯-এ কার্গিল যুদ্ধে শত্রুর গোলায় শহিদ হয়েছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংহ। রণক্ষেত্রের ‘ফ্রন্ট লাইনে’। আর তাঁর কন্যা গুরমেহের কউর সব আড়াল সরিয়ে বেপরোয়া লড়াই শুরু করে দিলেন বিজেপি’র খাসতালুক দিল্লিতে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৮:৪৩

শত্রুর সামনে বসেই শত্রুর বিরুদ্ধে বেপরোয়া গোলাবর্ষণ!

যাকে বলে, একেবারে ‘বাপ কা বেটি’! বেপরোয়া শত্রুর বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়ার স্পর্ধা আর অদম্য জেদে! বাবা লড়াইটা করেছিলেন কাশ্মীর সীমান্তের একেবারে ‘লাস্ট ফ্রন্টিয়ার’- কার্গিলে, শত্রু পাকিস্তানি হানাদারদের খাস ঘাঁটিতে। ’৯৯-এ কার্গিল যুদ্ধে শত্রুর গোলায় শহিদ হয়েছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংহ। রণক্ষেত্রের ‘ফ্রন্ট লাইনে’। আর তাঁর কন্যা গুরমেহের কউর সব আড়াল সরিয়ে বেপরোয়া লড়াই শুরু করে দিলেন বিজেপি’র খাসতালুক দিল্লিতে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর হুমকি, দৌরাত্ম্য, তাণ্ডবের বিরুদ্ধে। নির্ভয়ে, ‘ফ্রন্ট লাইনে’ দাঁড়িয়েই, ফেসবুকে। আত্মপরিচয় গোপন না করেই ফেসবুকে তাঁর পোস্টে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি শ্রীরাম কলেজের কলাবিভাগের স্নাতক স্তরের ছাত্রী গুরমেহের কউর লিখেছেন, ‘‘আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আমি এবিভিপি-কে ভয় পাই না। আমি একা নই। ভারতের সব ছাত্রছাত্রীই আমার সঙ্গে রয়েছেন।’’

প্রকাশ্যে সমালোচনা করায় সরকারি অসহিষ্ণুতার তোপের হাত থেকে যখন রেহাই পাননি আমির খানের মতো সেলিব্রিটিরাও, তখন কলেজপড়ুয়া গুরমেহের সরাসরি শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ফেসবুকের মতো শক্তিশালী সোশ্যাল মিডিয়ায় বেপরোয়া ‘যুদ্ধঘোষণা’ করে চমকে দিয়েছেন আপামর দেশবাসীকে।


গুরমেহেরের সেই ফেসবুক পোস্ট

তাঁর ফেসবুক পোস্টে দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের স্নাতক স্তরের ছাত্রী গুরমেহের কউর লিখেছেন, ‘‘নিরীহ ছাত্রদের ওপর এবিভিপি যে বর্বর তাণ্ডব চালাচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। এটা নিছক প্রতিবাদীদের ওপর হামলা নয়, এ দেশের গণতন্ত্রের প্রতিটি ধারণার ওপরেই একটা বড়সড় আঘাত। এটা স্বাধীন চিন্তা, মতাদর্শ, নৈতিকতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপর নির্লজ্জ হামলা। হামলা নাগরিক অধিকারের ওপরেও। তোমরা (এবিভিপি) যে পাথরগুলি ছুঁড়ছ আমাদের দিকে, মনে রেখো, তা আমাদের গায়ে লাগছে ঠিকই, কিন্তু সেগুলি আমাদের ধ্যানধারণাকে আদৌ বদলাতে পারছে না। সেই তাণ্ডব, সেই ভয়ের পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই আমি এই প্রোফাইল ছবিটা দিলাম। আমি দেশের সব রাজ্যের সবক’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বলব, যদি তোমরা এবিভিপি’র ওই সব কার্যকলাপের প্রতিবাদ জানাতে চাও, তা হলে তোমরাও আমার মতো সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট কর। আর তার সঙ্গে আমার এই মেসেজটাকেও জুড়ে দিও। দেশের সব ছাত্রছাত্রীদের এ বার একজোট হওয়ার সময় হয়েছে। জয় হিন্দ! জয় গণতন্ত্র!’’

আরও পড়ুন- আপনি মুসলিম? আমেরিকায় হেনস্থার শিকার মহম্মদ আলির ছেলেও

গুরমেহেরর এই ফেসবুক পোস্টটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ফেসবুকে। ‘লাইক’ পড়েছে হাজারে হাজারে। প্রচুর ফেসবুক ইউজার তাঁদের প্রোফাইল ছবি তুলে নিয়ে তার জায়গায় গুরমেহেরের মতো প্রতিবাদী পোস্টার হাতে নিয়ে তোলা সেলফি দিয়ে পোস্ট করতে শুরু করেন ফেসবুকে, বন্যার মতো। গত বুধবারই দিল্লির একটি কলেজে এবিভিপি’র হামলায় গুরুতর জখম হন ২০ জন ছাত্রছাত্রী।

গুরমেহের বরাবরই বেপরোয়া। প্রতিবাদী। ২ বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিলেন গুরমেহের। আর সেই থেকেই তাঁর ‘চিরশত্রু’ হয়ে ওঠে পাকিস্তান। পাকিস্তানের মানুষের সম্পর্কে জন্ম নেয় ঘৃণা। সেই ঘৃণা থেকেই ৬ বছর বয়সে তাঁর বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এক বোরখা পরা মহিলাকে ছুরি মারতে গিয়েছিলেন গুরমেহের। গুরমেহেরের কথায়, ‘‘আমি ভেবেছিলাম, ওই মহিলাই আমার বাবাকে মেরেছে। তখন মা আমাকে বুঝিয়েছিল, পাকিস্তানকে শত্রু ভেব না, তোমার বাবা যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন।’’

ABVP Facebook Post against ABVP Protests against ABVP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy