Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

কর্নাটকে আস্থা ভোট বৃহস্পতিবার, পুলিশি নিরাপত্তা চাইলেন বিক্ষুব্ধরা

মুম্বইয়ের পোয়াই এলাকায় ওই হোটেলে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে এ দিন দেখা করার কথা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

স‌ংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ১২:২৭
Share: Save:

একের পর এক বিক্ষুব্ধ বিধায়কের ইস্তফার পর আগামী বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটের মুখোমুখি হবে কর্নাটকের জোট সরকার। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া। আগামী বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই সকাল ১১টা থেকে রাজ্যের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবং জেডিএস জোট সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ দিতে হবে।

এ দিন দুপুরে বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমারের সঙ্গে শাসক ও বিরোধী— দু’পক্ষেরই বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর ইস্তফা দাবি করেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির আরও দাবি, কর্নাটকের জোট সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। এ দিনই বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন তাঁরা। তবে বিধানসভায় কার্যাবলী নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্যানেলের সঙ্গে বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আস্থা ভোট হবে।

আস্থা ভোটের দিন ঘোষণার আগে আরও এক প্রস্থ নাটকীয় পরিস্থিতি দেখা দেয় মুম্বইয়ে। সেখানকার হোটেলে আশ্রয় নেওয়া কর্নাটকের বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা স্পষ্ট করে দেন, আস্থা ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকমের সমঝোতায় যেতে নারাজ তাঁরা। কংগ্রেসের থেকে গুরুতর হুমকির আশঙ্কায় পুলিশের কাছে এ দিন ফের চিঠি দেন মুম্বইয়ের হোটেলে আশ্রয় নেওয়া ওই রাজ্যের ১৪ বিধায়ক। এর ফলে আরও ঘোরাল হয় রাজ্যের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ। এই আবহেই সোমবার দুপুরে কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতারা। পাল্টা হিসাবে শাসক দলের নেতা-সহ মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীও স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক করেন।

মুম্বইয়ের হোটেলে বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা। ফাইল চিত্র।

এর আগে মুম্বই পুলিশের কাছে লেখা একটি চিঠিতে বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা দাবি করেন, কংগ্রেস নেতারা তাঁদের সঙ্গে দেখা করে হুমকি দিতে পারেন। সে কারণেই কর্নাটক বা মহারাষ্ট্রের কোনও কংগ্রেস নেতার সঙ্গে দেখা করতে চান না তাঁরা। পুলিশের কাছে ওই নেতাদের থেকে সুরক্ষার আবেদনও করা হয়েছে ওই চিঠিতে।

মুম্বইয়ের পোয়াই এলাকায় ওই হোটেলে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে এ দিন দেখা করার কথা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের। তবে ওই নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার রাস্তায় যেতে নারাজ বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা। পোয়াই পুলিশকে বিধায়কেরা লিখেছেন, ‘মল্লিকার্জুন খড়্গেজি বা গুলাম নবি আজাদ অথবা মহারাষ্ট্র বা কর্নাটকের অন্য কোনও কংগ্রেস বা রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করার কোনও ইচ্ছে নেই আমাদের। ... আমরা তাঁদের থেকে গুরুতর হুমকির আশঙ্কা করছি।’ সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, কংগ্রেস নেতাদের ঠেকাতে বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হতে পারেন।

আরও পড়ুন: সবাইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু নিজেই সম্পত্তির হিসেব দেননি প্রধানমন্ত্রী

পুলিশকে লেখা বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের চিঠি। ছবি: সংগৃহীত।

তবে এই প্রথম নয়, এর আগে গত সপ্তাহেও মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা। পোয়াইয়ের যে হোটেলে তাঁরা রয়েছেন, সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কর্নাটকে জোট সরকার গড়ার অন্যতম কারিগর ডিকে শিবকুমার। তাঁর বিরুদ্ধেও মুম্বই পুলিশের কাছে চিঠি লেখেন বিধায়কেরা। হোটেলে পৌঁছলে শিবকুমারকে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেন তাঁরা। ওই হোটেলে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনও লাভ হয়নি শিবকুমারের। বরং মুম্বই পুলিশ তাঁকে আটক করে বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকেই বেঙ্গালুরুতে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি।

আরও পড়ুন: অটিজমে আক্রান্ত ছেলেকে ভর্তি নেয়নি ৪২ স্কুল, নিজেই স্কুল খুলে আজ ইনি কয়েকশো সন্তানের মা

বিধানসভার ভোটের পর বছরখানেকের মধ্যেই সংখ্যা-সঙ্কটে কর্নাটকের কংগ্রেস এবং জেডিএস জোট সরকার। গত সপ্তাহে জোটের ১৬ জন বিধায়ক ও ২ জন নির্দল বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। যার ফলে সংখ্যার বিচারে সঙ্কটে পড়ে জোট সরকার। ২২৫ আসনের কর্নাটক বিধানসভায় বিজেপির কাছে ১০৭ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। অন্য দিকে, কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার ওই ১৬ জনের ইস্তফা গ্রহণ করলে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর সরকার পতনের সম্ভাবনা। কারণ, ১৬ জন বিধায়ক ও ২ জন নির্দলের ইস্তফায় জোটের সংখ্যা ১১৮ থেকে ১০০-তে নেমে যাবে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ইস্তফা বা বিধায়কপদ খারিজ করা নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না আদালত। ওই দিনই ১১ দিনের জন্য বিধানসভার জরুরি অধিবেশন শুরু হলে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী স্পিকারের কাছে আস্থা ভোটের আর্জি জানান। জোটের সংখ্যা ঠিক রাখতে এখন মরিয়া প্রচেষ্টা শুরু করেছে কর্নাটক সরকারের নেতারা।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE