Advertisement
E-Paper

Karnataka High Court: দুর্নীতির বিরোধিতার ‘শাস্তি’, বিজেপির বিরুদ্ধে কর্নাটকে বিচারপতিকে বদলির হুমকির অভিযোগ

বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশের পরেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বেঙ্গালুরু সিটি ডেপুটি কমিশনার মঞ্জুনাথ জে-কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ০৭:৫২

ফাইল চিত্র।

বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার এবং দুর্নীতিদমন শাখার (এসিবি) এডিজিপি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতি তুলে ধরায় তাঁকে বদলির হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে কর্নাটকের বিজেপি সরকারকে ভর্ৎসনা করলেন কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি এইচ পি সন্দেশ। তবে ওই বিচারপতি স্পষ্ট জানান, যতই চাপ দেওয়া হোক, তিনি মাথা নোয়াবেন না। বিচারব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষায় তিনি বদ্ধপরিকর।

এই ঘটনায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর টুইট, ‘‘একের পর এক প্রতিষ্ঠান বিজেপি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। যাঁরা নির্ভয়ে তাঁদের কর্তব্য পালন করছেন, আমাদের প্রত্যেককে তাঁদের পাশে থাকতে হবে।’’

বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশের পরেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বেঙ্গালুরু সিটি ডেপুটি কমিশনার মঞ্জুনাথ জে-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে সাসপেন্ড করেছে রাজ্য সরকার।

আদালতে গত শুনানিতে বিচারপতি সন্দেশ জানতে চান, এসিবি-র এডিজিপি পোস্টিংয়ের আগে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সরকার খতিয়ে দেখেছে কি না। কারণ, এর আগে পুলিশ সুপার থাকাকালীন ওই আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। এর পাশাপাশি বিচারপতি এসিবি-র কাছে জানতে চান, কতগুলি তল্লাশি পরোয়ানা জারি করা হয়, তার মধ্যে কতগুলি ক্ষেত্রে সত্যিই তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং কতগুলি ক্ষেত্রে প্রাথমিক তদন্তে তথ্যপ্রমাণ না মেলায় চার্জশিট পেশ করা যায়নি (‘বি’ রিপোর্ট)।

প্রসঙ্গত, পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময়ে হাতেনাতে ধরার পড়েন ডেপুটি কমিশনার। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি চলাকালীনই ক্ষোভ উগরে দেন বিচারপতি। বিচারপতি জানান, সহকর্মী এক বিচারপতির থেকে তিনি জেনেছেন, এর আগে দুর্নীতি সংক্রান্ত এমনই এক মামলায় বিচারপতিকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল। ঘটনাটিকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ বলে সরব হয়েছেন বিচারপতি সন্দেশ। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখা আমার কর্তব্য। একমাত্র সংবিধানের প্রতিই আমি দায়বদ্ধ। দেখতে চাই, সংবিধান নাকি উত্তর ভারতের ওই আইপিএস— কে বেশি ক্ষমতাবান।’’ এর পরেই তিনি জানান, কোনও রকম হুমকির কাছে মাথানত করবেন না। এক জন চাষির ছেলে হিসাবে প্রয়োজনে চাষ করবেন কিন্তু অপমান সহ্য করবেন না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হতে লালায়িত নন বলেও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি সন্দেশ। তাঁকে হুমকির ঘটনা মামলায় যুক্ত করা হবে বলেও জানান।

এসিবি-কে ‘কালেকশন সেন্টার’ বলে ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতি। একই সঙ্গে এসিবি-র এডিজিপি সীমন্থ কুমার সিংহ-কে কলঙ্কিত অফিসার বলেও উল্লেখ করেন।

হুমকি প্রসঙ্গে বিচারপতি জানান, তিনি ভীত নন। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারপতি হওয়ার পরে নিজের সম্পত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করিনি। তাই পদ চলে গেলেও কিছু যায় আসে না।’’ এর পাশাপাশি তিনি জানান, কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শ মেনেও চলেন না।

এসিবি-র রিপোর্ট নিয়ে বিচারপতি সন্দেশ জানান, এমন মামলায় ‘বি’ রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, যেখানে অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট কেন পেশ করা হচ্ছে না, সেই নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সূত্রেই এসিবির উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা কি জনসাধারণকে বাঁচাচ্ছেন নাকি এক কলঙ্কিত ব্যক্তিকে?... দুর্নীতি ক্যানসারে পরিণত হয়েছে। তা চতুর্থ স্তরে পৌঁছতে দেওয়া যাবে না। তল্লাশি পরোয়ানার হুমকি দিয়ে অফিসারেরা তোলাবাজি চালাচ্ছেন।’’

আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এসিবি এডিজিপি-র সার্ভিস রেকর্ড এখনও কেন জমা পড়েনি প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, দুর্নীতি এমন ভাবে বিস্তার লাভ করেছে যে, ভিটামিন এম (অর্থ) দিলে যে কাউকে রক্ষা করা হবে।

৭ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। অ্যাডভোকেট জেনারেল পি কে নভদগি বিচারপতি সন্দেশকে অনুরোধ করেছেন এই ঘটনায় যেন তিনি আহত না হন। রাজ্য সরকার আদালতের পাশে আছে। তার প্রেক্ষিতে ফের উষ্মা প্রকাশ করে বিচারপতি জানান, পুলিশ সাব ইনস্পেক্টরের ৫৪৫টি পদের মধ্যে ৪০০টিই বিক্রি করা হয়েছে। পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকার কী করছে? কেন আইপিএস-আইএএস অফিসারদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে?

Karnataka High Court BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy