Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Onions

ভোটবাক্সে পেঁয়াজের ঝাঁঝ এড়াতে বন্ধ রফতানি 

মোদী সরকারের এই আচমকা সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১১
Share: Save:

গত ছ’মাসে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রায় দু’গুণ বেড়েছে। সামনেই বিহারের বিধানসভা ভোট এবং মধ্যপ্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ উপনির্বাচন। তার আগে পেঁয়াজের অগ্নিমূল্যের খেসারত দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। সে কারণেই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সোমবার রাতে পেঁয়াজের রফতানির উপরে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

কিন্তু মোদী সরকারের এই আচমকা সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশের রান্নাঘরে ভারতের পেঁয়াজেরই জয়জয়কার। নয়াদিল্লি আচমকা পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে এক লাফে পেঁয়াজের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। গত বছর অক্টোবরে ভারত সফরে এসেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আচমকা পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মজা করে বলেছিলেন, ‘‘আমি তো রাঁধুনিকে বলেছি, এখন থেকে রান্নায় পেঁয়াজ বন্ধ করে দাও!’’

সোমবারের সিদ্ধান্তের পরে বাংলাদেশ সরকারের সূত্রের বক্তব্য, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলেই বাংলাদেশে কালোবাজারি শুরুর ফলে দাম বেড়ে যায়। ভারত যদি আগেভাগে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সুবিধা হয়। সোমবারের সিদ্ধান্তের পরে বাংলাদেশ সরকারের তরফে দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অনুরোধ করা হয়েছে, অন্তত বরাত দেওয়া পেঁয়াজের রফতানিতে যেন বাধা না আসে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য যুক্তি, গত কয়েক মাসে যে পরিমাণ পেঁয়াজ বাংলাদেশে রফতানি হয়েছে, তাতে অভাব হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সূত্রের যুক্তি, যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুত থাকলেও অভাবের আশঙ্কায় বাজারে দাম বেড়ে যায়।

বিদেশের কড়াইয়ে দেশের পেঁয়াজ
মোট রফতানি ২০১৯-২০
• ১১.৪৯ লক্ষ মেট্রিক টন
• মূল্য ৩২ কোটি ২০ লক্ষ ডলার
• বাংলাদেশ ২৪%
• মালয়েশিয়া ১৯%
• সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ১৩%
• শ্রীলঙ্কা ১৩%
• নেপাল ৪%

আরও পড়ুন: স্ত্রী করোনা পজিটিভ হয়ে আইডিতে, কোয়রান্টিনে সূর্যকান্ত মিশ্র

মোদী সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের যুক্তি, দেশে পেঁয়াজের বৃহত্তম পাইকারি বাজার লাসালগাঁওতে মার্চ মাসে ১৫০০ টাকা কুইন্টাল দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। সেপ্টেম্বরে তা ৩ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। ফলে ভবিষ্যতে খুচরো বাজারে এর আঁচ পড়বে। খুচরো বাজারে এখন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। জুন-জুলাইয়ে তা ২০ টাকা ছিল। এমনিতেই খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার সাড়ে ৬ শতাংশের উপরে।

কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের পেঁয়াজ চাষিদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের যুক্তি, যখনই তাঁরা একটু ভাল দাম পেতে শুরু করছিলেন, তখনই সরকার পেঁয়াজের

রফতানি বন্ধ করে দিল। ফলে দাম ফের পড়ে যাবে। সিপিএমের সারা ভারত কিষাণ সভার নেতা অজিত নভলে বলেন, ‘‘গোটা দেশের পেঁয়াজ চাষিদের সঙ্গে প্রতারণা করা হল। চাষিরা রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ জানাবেন।’’ আজ এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে দেখা করে চাষিদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, এর ফলে তো পাকিস্তানের মতো দেশ ভারতের বাজার গ্রাস করবে।

আরও পড়ুন: ৫০ লক্ষে ভারত, তবু লকডাউনের গুণগান​

কিন্তু মোদী সরকার বিহার ভোটের আগে পেঁয়াজের দাম নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে সচিবদের গোষ্ঠী

পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পেঁয়াজের দাম হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হস্তক্ষেপ করা হবে। পেঁয়াজের যথেষ্ট চাষ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে বীজ আমদানি করা হবে। আপাতত মুম্বই, দিল্লি, কলকাতা, হায়দরাবাদের মতো শহরের পাইকারি বাজারে সরকারি গুদাম থেকে ৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মাণ্ডি দরে বাজারে ছাড়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Onions Onion Export Bangladesh Modi Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy