Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
kerala

৫ মন্ত্রী, স্পিকারকে বাদ দিচ্ছে কেরলের সিপিএম

সিপিএম সূত্রের খবর, এ বার প্রার্থী তালিকায় নাম থাকছে না মন্ত্রী টমাস আইজ়্যাক, এ কে বালন, জি সুরেন্দ্রন, সি রবীন্দ্রনাথ, স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণন প্রমুখের। প্রার্থী করা হচ্ছে না মন্ত্রী ই পি জয়রাজনকেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২১ ০৬:২১
Share: Save:

বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রশ্নে কেরলের ছায়া বারবার পড়েছে বঙ্গের সমীকরণে। এ বার প্রার্থী বাছাইয়ের প্রশ্নে বাংলার ছায়া গিয়ে পড়ছে দক্ষিণের কেরলে!

বাংলায় এ বার বিধানসভা ভোটে কয়েক জন মন্ত্রী-সহ দলের ৫৭ জন বর্তমান বিধায়ককে টিকিট দেননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেরলে আবার শাসক সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে টানা দু’বার বিধায়ক হয়েছেন, এমন কাউকে আর প্রার্থী না করার। সেই তালিকা অনুযায়ী এ বার আর প্রার্থী হতে পারছেন না অন্তত পাঁচ জন মন্ত্রী, বিদায়ী বিধানসভার স্পিকার এবং আরও কিছু বর্ষীয়ান নেতা। প্রতিষ্ঠিত নেতাদের বিধানসভার ময়দান থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন উঠছে সিপিএমের নিচু তলায়। সেখানেও আবার দলের রাজ্য নেতৃত্ব বাংলার উদাহরণ দিচ্ছেন। তাঁদের যুক্তি, নিয়মে বেঁধে নতুন মুখ তুলে আনার কাজ না করলে পরে সংগঠনে সমস্যা দেখা দেয়। ক্ষমতা হারানোর পরে প্রথম দিকে যা হয়েছে বাংলায়। এখন বাংলাতেও বামেরা তরুণ মুখের উপরে ভরসা করে নির্বাচনে লড়ছে।

সিপিএম সূত্রের খবর, টানা দু’দফা বিধায়ক থাকলে আর টিকিট নয়— এই নীতি অনুযায়ী এ বার প্রার্থী তালিকায় নাম থাকছে না মন্ত্রী টমাস আইজ়্যাক, এ কে বালন, জি সুরেন্দ্রন, সি রবীন্দ্রনাথ, স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণন প্রমুখের। প্রার্থী করা হচ্ছে না মন্ত্রী ই পি জয়রাজনকেও। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলে জিএসটি কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার দুই উল্লেখযোগ্য মুখ অমিত মিত্র ও আইজ়্যাককে এর পরে আর সেই ভূমিকায় দেখা যাবে না।

কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এই সিদ্ধান্ত প্রথমে রাজ্য কমিটিতে পেশ করা হয়েছিল। সেখানে দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ প্রশ্ন তোলেন— ভাবমূর্তি, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা বা জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক বা শারীরিক সক্রিয়তা, এমন কোনও মাপকাঠি না রেখে ‘যান্ত্রিক’ ভাবে নতুন মুখ নিয়ে আসা কি সঙ্গত? জবাবে দলের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবন বলেছেন, রাজ্য কমিটিতেই আগে এই নীতি স্থির হয়েছিল। এখন সেটাই পূর্ণ মাত্রায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

কিন্তু প্রার্থী তালিকা থেকে কিছু পুরনো নেতা বাদ পড়তে যাচ্ছেন জেনে জেলায় জেলায় দলের অন্দরে অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়েছিল এর পরেও। বাংলার মতো কেরলে অবশ্য দলবদলের হিড়িক পড়েনি! পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিরুঅনন্তপুরমে এ কে জি সেন্টারে সোমবার ফের বৈঠকে বসেছিল কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। বিষয়টি নিয়ে সেখানে ফের সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। দলের অবস্থানের পক্ষেই সওয়াল করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পলিটবুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, সামনের বার তাঁর জন্যও দু’বারের নীতি প্রযোজ্য হবে। নতুনদের সামনে এগিয়ে দিয়ে পুরনো নেতারা সংগঠনে দায়িত্ব পালন করবেন। ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এ ভাবেই দলকে এগোতে হবে।

এরই পাশাপাশি দলের আলোচনায় ঠিক হয়েছে, দু’বছর আগে লোকসভা ভোটে সিপিএমের যে প্রথম সারির নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে পি রাজীব, কে এন বালগোপাল, ভি এন বাসবন এবং এম বি রাজেশকে এ বার বিধানসভাতেও প্রার্থী করা হবে। কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘প্রতিষ্ঠিত নেতাদের প্রার্থী করে গেলে তাঁরা হয়তো নির্বাচনে জিতে যান। কিন্তু পরবর্তী স্তরের মুখ তৈরি না হলে পুরনো নেতারা সরে গেলেই সংগঠনে শূন্যতা দেখা দেয়। বাংলায় সাড়ে তিন দশক টানা ক্ষমতায় থাকার সুবাদে অনেক ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি সংগঠনে যে সমস্যা হয়েছে, সেই অভিজ্ঞতা আমরা মাথায় রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM kerala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE