সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট গেল কেরল সরকার। এর আগেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, কেরলে সিএএ কার্যকর করা হবে না। এটাই তাদের সরকারের অবস্থান। সিএএ-র বিরুদ্ধে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ১৯ মার্চ, আগামী মঙ্গলবার সেই সব ক’টি আবেদন শুনবে শীর্ষ আদালত।
গত ১১ মার্চ সিএএ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যে সব হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রিস্টানেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন, তাঁদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করা হবে। ১৪ মার্চই কেরল সরকার জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে। এ বার সেই পথে এগিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতরের তরফে এই নিয়ে বিবৃতিও জারি করা হয়েছিল। তাতে জানানো হয়েছিল, সংবিধানের ১৩১ ধারার অধীনে আগেও সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এ বার সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি নিতে চলেছে রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকার এই আইন জারি করেছে। কেরল সরকারের অবস্থান হল, এ রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা হবে না। কেরলের আইনমন্ত্রী পি রাজীব বলেন, ‘‘সিএএ ভারতীয় সংবিধানের প্রাথমিক নীতির বিরোধী। এটা সংবিধান-বিরোধী ঘোষণা করার জন্য আবেদন করছি। আগের আবেদনেও সেই আর্জিই জানানো হয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টে আবার আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের অ্যাডভোকেট জেনারেল সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবীদের পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চালানোর জন্য কথাবার্তা বলছেন।’’
সিএএ-র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কেরলই প্রথম রাজ্য হিসাবে গিয়েছিল। ২০২০ সালে আবেদন করেছিল তারা। জানিয়েছিল, সংবিধানে নাগরিকদের যে সাম্যের অধিকার দেওয়া হয়েছে, সিএএ তার বিরোধী।
শনিবার সিএএ কার্যকরে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) দলের প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। শীর্ষ আদালতে জানানো আবেদনে ওয়েইসি জানিয়েছেন, সিএএ-তে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও, এই আইনে আসলে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। কিন্তু সিএএ-তে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রায় সাড়ে চার বছর আগে সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। গত সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিএএ কার্যকর করা জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিরোধীদের দাবি, সিএএ ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বৈষম্যমূলক’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy