কালাজাদু, জাদুবিদ্যা নিষিদ্ধ করতে কেন আইন আনা হচ্ছে না? কেরল সরকারের অবস্থানে অসন্তুষ্ট কেরল হাই কোর্ট। সরকারকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত। তবে কেরলের সরকারও তাদের অবস্থানের সপক্ষে পাল্টা যুক্তি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই ধরনের কোনও আইন প্রণয়ন করা হবে না বলে রাজ্যের মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
‘কেরল যুক্তিবাদী সংঘম’ নামের একটি সংস্থা কালাজাদু, জাদুবিদ্যা এবং অনুরূপ যাবতীয় ‘অমানবিক’ রীতির বিরুদ্ধে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। সেই সংক্রান্ত মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল কেরল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিতিন জমদার এবং বিচারপতি বসন্ত বালাজির ডিভিশন বেঞ্চে। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কেটি থমাসের নেতৃত্বাধীন একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছিল। সেই ‘কেরল অমানবিক অভ্যাস, জাদুবিদ্যা, কালাজাদু প্রতিরোধ বিল’-কে আইনে পরিণত করা হোক, আদালতে আবেদন জানিয়েছিল মামলাকারী সংগঠন। কেরল সরকার জানিয়েছে, এই বিল আইনে পরিণত করা হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রিসভাই সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শারীরিক ক্ষতি হতে পারে, এমন যে কোনও অনুশীলনকেই নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছিল এই বিলে। কেরল সরকার তার সে বিষয়ে পুরোপুরি একমত হতে পারেনি।
আরও পড়ুন:
এই মামলায় সওয়াল করতে গিয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, এই ধরনের কোনও আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য করতে পারে না আদালত। এমন কোনও বাধ্যতামূলক নির্দেশ জারি করা যায় না। কারণ, এটি নির্বাহী নীতির (এগ্জ়িকিউটিভ পলিসি) অধীনে পড়ে। সরকার পক্ষের অবস্থানে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেরল হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কেরল সরকারকে কালাজাদু বা জাদুবিদ্যার প্রসার রোধে বিকল্প ব্যবস্থা প্রস্তাব করতে বলেছে।
কালাজাদু এবং জাদুবিদ্যা সম্পর্কে কেরল সরকারের অবস্থান স্পষ্ট জানতে চেয়েছে আদালত। পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, কালাজাদুকে যে সরকার সমর্থন করে, বা এই অনুশীলন যে তারা নির্মূল করতে চায় না, এমন কোনও বক্তব্য সরকারের হলফনামা থেকে স্পষ্ট হয়নি। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করতে না-চেয়ে সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তা কালাজাদুকে সমর্থনেরই শামিল। যে কোনও আইন প্রণয়ন আইনসভার উপর নির্ভরশীল। আইন প্রণয়ন করতে তাই রাজ্য সরকারকে বাধ্য করতে পারে না আদালত। পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা সে কথা মেনে নিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে কেরল সরকারের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত হলফনামা চাওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জুলাই কেরল হাই কোর্টে আবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে।