Advertisement
E-Paper

রাঁচীর সম্পত্তিকে ঘিরে ঠাকুরবাড়ির জ্ঞাতি-যুদ্ধ

সম্পত্তি নিয়ে ঠাকুরবাড়ির জ্ঞাতি-লড়াই এ বার রাঁচীর নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়াতে চলেছে। এক দিকে রয়েছেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজ ছেলে সত্যেন্দ্রনাথের বংশধর সুনন্দ ঠাকুর। অন্য দিকে, সেজ ছেলে হেমেন্দ্রনাথের নাতির নাতি হিমেন্দ্রনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২২
হিতাবাস। রাঁচীর এই বাড়ি এবং জমিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে জ্ঞাতি-যুদ্ধ। — নিজস্ব চিত্র

হিতাবাস। রাঁচীর এই বাড়ি এবং জমিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে জ্ঞাতি-যুদ্ধ। — নিজস্ব চিত্র

সম্পত্তি নিয়ে ঠাকুরবাড়ির জ্ঞাতি-লড়াই এ বার রাঁচীর নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়াতে চলেছে। এক দিকে রয়েছেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজ ছেলে সত্যেন্দ্রনাথের বংশধর সুনন্দ ঠাকুর। অন্য দিকে, সেজ ছেলে হেমেন্দ্রনাথের নাতির নাতি হিমেন্দ্রনাথ। আর বিবাদের মূলে রয়েছে রাঁচীর দীপটোলার ‘হিতাবাস’। বাড়ি-বাগান মিলিয়ে পাঁচ একর বা পনেরো বিঘে জায়গা।

হিমেন্দ্রনাথের বক্তব্য, গত শতকের গোড়ায় ওই জমিটি কিনেছিলেন হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে হিতেন্দ্রনাথ। তৈরি করেন বাড়ি—হিতাবাস। বাড়ির বর্তমান মালিক তাঁর নাতি হৃদিন্দ্রনাথের ছেলে হিমেন্দ্রনাথ। হিমেন্দ্রনাথ কয়েক বছর আগে রাঁচী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, ওই জমি ও বাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করে তা বিক্রি করার চেষ্টা করছে এক অসাধু প্রোমোটার চক্র। এমনকী তাঁকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকবার বাড়িতে দুষ্কৃতী হানাও হয়েছিল বলে তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। হিমেন্দ্রনাথের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।

রাঁচী পুলিশের ডিএসপি (সদর) বিকাশ শ্রীবাস্তব জানান, ‘‘আমাদের তদন্তে অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে কলকাতার সুনন্দ ঠাকুরের নাম।’’ পরিস্থিতি এমনই যে হিতাবাসের বর্তমান বাসিন্দা হিমেন্দ্রনাথ তাঁর জ্ঞাতি-কাকাকে চিনতেই চাইছেন না।

অথচ সুনন্দবাবু কলকাতায় ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে ওয়াকিবহালদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত নাম। সুনন্দবাবু জানান, ‘‘সত্যেন্দ্রনাথের ছেলে সুরেন্দ্রনাথের চার ছেলে—সুবীর, প্রবীর, মিহির এবং সুনৃত। মিহিরেন্দ্রনাথ আমার বাবা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাঁচীর ওই জমিটি কেনেন সুরেন ঠাকুর। তিনিই জমিটি তাঁর সেজ ছেলে মিহিরেন্দ্রনাথকে দিয়ে যান। সেই দলিলও আমার কাছে আছে।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘রাঁচী পুলিশ বা হিতাবাসের বাসিন্দা আমার বংশমর্যাদাকেই চ্যালেঞ্জ করছেন!’’

হিমেন্দ্রনাথের দাবি, সুনন্দর কাছে যে দলিলটি রয়েছে তা জাল। আবার সুনন্দবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দলিলটি জাল না আসল তা আদালতই ঠিক করুক। পুলিশের একাংশ কেন বিচারাধীন এই মামলায় ঢুকবে?’’ তাঁর বক্তব্য, এটা তো ফৌজদারি কোনও মামলা নয়।

সুনন্দবাবু জানান, তিনি রাঁচীর সমস্ত পুলিশ কর্তাকে আগেভাগেই যাবতীয় ঘটনা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। এরপরেও বিকাশ শ্রীবাস্তব কেন সংবাদ মাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে এমন কথা বলছেন তা ভেবে বিস্মিত সুনন্দবাবু মানহানির মামলা করার কথাও ভাবছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি রাঁচী হাইকোর্টেও আবেদন করার কথা ভাবছি।’’

সুনন্দবাবুর বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পুলিশের তদন্তকারী অফিসার, ডিএসপি (সদর) বিকাশ শ্রীবাস্তব কিন্তু তাঁর আগের বক্তব্যে অনড়ই রয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘সুনন্দ ঠাকুরের বিরুদ্ধে আমাদের যথেষ্ট প্রমাণ মেলার পরেই ওঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ওই জমি প্রতারণার মামলায় আমরা যে কেস ডায়েরি লিখেছি তাতে সুনন্দ ঠাকুরের নাম আছে।’’ আর মূল অভিযোগকারী হিমেন ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘সুনন্দ ঠাকুর সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতির ছেলে কিনা আমার জানা নেই। ঠাকুর পরিবারের কোনও মানুষ যদি এই জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’

Rabindranath Tagore Property
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy