খাতায়কলমে দু’জনেই পলাতক। ভারতে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপের মামলা চলছে তাঁদের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাতে কী? বিদেশে দু’জনেই রয়েছেন দিব্যি খোশমেজাজে! সপ্তাহান্তে পার্টি করছেন, গানও গাইছেন গলা ছেড়ে।
সম্প্রতি লন্ডনে একটি জমকালো পার্টিতে দেখা গিয়েছে দুই ‘ঋণখেলাপি’কে। তাঁরা হলেন ললিত মোদী এবং বিজয় মাল্য। দু’জনেরই পরনে দামি স্যুট। পার্টির মধ্যমণি হয়ে গলা জড়িয়ে গানও গেয়েছেন তাঁরা। পার্টির একটি ভিডিয়ো নিজেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন ললিত। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তাতে দেখা যাচ্ছে, ললিত গাইছেন ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রার ‘মাই ওয়ে’ গানটি। কিছু ক্ষণ পর উঠে এসে তাতে গলা মেলাচ্ছেন মাল্যও। গানে তাল মেলাচ্ছেন বাকি অতিথিরাও।
ভিডিয়োর সঙ্গে ললিত লেখেন, ‘‘৩১০ জন বন্ধু ও পরিজনের সঙ্গে একটা দুর্দান্ত রাত কাটালাম! অনেকে বহু দূর থেকে শুধু এই পার্টির জন্যই এসেছিলেন। যাঁরা যাঁরা এসেছিলেন এবং আমার রাতকে সুন্দর করে তুলেছিলেন, তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ। এই ভিডিয়োটি নিয়ে বিতর্ক হবে তা আমি জানি। অবশ্য আমাকে সেটাই মানায়! আশা করি এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ঝড় তুলবে না।’’ পোস্টে মাল্যকেও ‘ট্যাগ’ করেছেন ললিত।
আরও পড়ুন:
-
ক্ষতিপূরণের ফর্মে ‘ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য’ জেনে নিচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া! আপত্তি তুলল বিমান দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার
-
আকারে কুতুব মিনারের ন’গুণ! বিশালাকার এই গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে, সজাগ নাসার বিজ্ঞানীরা
-
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস ইউরোপ! মৃত্যু ৮ জনের, কোথাও দোসর দাবানল, কোথাও বন্ধ করে দিতে হল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র
উল্লেখ্য, পলাতক ললিত ও মাল্যকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন সহ-সভাপতি ললিতের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর হাত ধরেই ‘ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ’ বা আইপিএল-এর সূচনা হয়েছিল। অভিযোগ, আইপিএলের শীর্ষপদে থাকাকালীন প্রচুর টাকার আর্থিক দুর্নীতি করেছিলেন ললিত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রচুর টাকাও তিনি নয়ছয় করেছিলেন বলে অভিযোগ। শাস্তি এড়াতে ২০১০ সালে ভারত ছাড়েন ললিত। লন্ডনে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। সম্প্রতি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ভানাটুর নাগরিকত্বও পেয়েছিলেন তিনি। যদিও নাগরিকত্ব পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে দেয় ভানাটু। অন্য দিকে, মাল্য ছিলেন ‘কিংফিশার’ উড়ান সংস্থার (বর্তমানে অস্তিত্বহীন) মালিক। ১৭টি ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের জন্য প্রায় ন’হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা মেটাতে পারেননি। ২০১৬-র মার্চ মাসে লুকিয়ে দেশ ছেড়ে পালান মাল্য। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল লন্ডনে গ্রেফতার হন তিনি। কিন্তু গ্রেফতারির তিন ঘণ্টার মধ্যেই জামিনে মুক্তি পেয়ে যান মাল্য। ললিত ও মাল্য, দু’জনকেই দেশে ফেরানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। তার মাঝেই ললিতের ভিডিয়ো নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিল।