শাসক বলছে, জমি পড়ে থাকলে বেদখল হয়ে যেত। তা-ই তা দেওয়া হয়েছে বাবা রামদেবের হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভূমিপুত্রদের জমি বিজেপিতে তুষ্ট করতে অন্যায় ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরে এমন দ্বন্দ্বের মধ্যেই অসমে পতঞ্জলি যোগপীঠে শুরু হয়েছে গবাদি প্রজনন ও ওষধি গাছের গবেষণাকেন্দ্রের কাজকর্ম।
বড়ো স্বশাসিত পরিষদের শাসকদল বিপিএফ কংগ্রেস জোট ছেড়ে এখন বিজেপির হাত ধরে শাসক শিবিরের শরিক। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পরই বাবা রামদেবের সংস্থাকে বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারি চিরাং জেলায় প্রায় ৪৮৫ হেক্টর জমি দিয়ে দেন। জমির বিনিময়ে নেওয়া হয়নি কোনও টাকা। পরিষদের বক্তব্য ছিল, জমি পড়ে থেকে থেকে অনুপ্রবেশকারীদের ঘাঁটি হতো। বেহাত হওয়ার চেয়ে যোগপীঠ গড়লে গোপালন ও আয়ুর্বেদের ভাল কেন্দ্রও হবে, অনেক স্থানীয় যুবক কাজ পাবেন। বিরোধীদের অভিযোগ, আই নদীর পাশে থাকা ওই জমির পুরোটা খাসজমি ছিল না। তার মধ্যে অনেক জমি ব্যক্তিগত মালিকানাধীনও ছিল। কিন্তু নদীর বন্যার জেরে বাসিন্দারা ওই সব জমি খালি করে অন্যত্র চলে যান। প্রথমে সেখানে নলেজ সিটি বা বিমানবন্দর গড়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু জমি তুলে দেওয়া হয় রামদেবের হাতে। পাশাপাশি বড়োভূমির উদালগুড়িতেও প্রায় ৮৯ একর জমি পতঞ্জলির হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে বলে বিরোধী শিবিরের আশঙ্কা।
এ ভাবে বিপিএফের একতরফা ভাবে জমি রামদেবের হাতে তুলে দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছে অল বড়ো ছাত্র সংগঠন বা আবসু এবং তাদের সহযোগী আলোচনাপন্থী এনডিএফবি।
আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়োর অভিযোগ, জমি খালি পড়ে থাকলেই সরকার তার মালিক হতে পারে না। কিন্তু বড়োভূমিতে বিপিএফ প্রধান ও বিটিসির মাথা হাগ্রামা মহিলারির একনায়কতন্ত্র চলছে। যে জমি রামদেবকে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কয়েক জন বড়ো, রাভা, রাজবংশী ও সংখ্যালঘুদের জমি ছিল। জমি দেওয়ার আগে মালিকদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। সেখানে নির্মাণও শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। বড়োর দাবি, অনেক জমির মালিক জানেনও না যে তাঁদের জমিতে যোগপীঠ গড়া হচ্ছে। জবরদখলের যুক্তি উড়িয়ে আবসুর প্রশ্ন, রাজ্যের অনেক অংশেই জমি জবরদখল হচ্ছে। তা হলে কী সেই সব জমিই এ ভাবে রামদেবকে দিয়ে দেওয়া হবে?
রাজ্যের শিল্প প্রতিমন্ত্রী পল্লবলোচন দাস জানান, বিটিসি কার্যবাহী পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই জমিতে গরু ও পঞ্চগব্য গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে গরুর বিভিন্ন উন্নত প্রজাতির প্রজনন, গোপালন প্রশিক্ষণ, ওষধি গাছ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত গবেষণা ও কাজ চলবে। চুক্তি অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে কাজ শুরু না হলে জমি বিটিসির রাজস্ব বিভাগের হাতে ফেরত চলে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy