এনডিটিভি ইন্ডিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আইনি লড়াই আপাতত স্থগিত রইল। কিন্তু বাড়ল রাজনৈতিক উত্তাপ। বিষয়টি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বিপাকে ফেলতে আরও তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমেছে কংগ্রেস।
পঠানকোট হামলার সময়ে এনডিটিভি-তে গোপন তথ্য প্রকাশ হয়েছে বলে দাবি করেছিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের এক কমিটি। ফলে সংশোধিত কেবল টিভি নেটওয়ার্কস (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী চ্যানেলটির সম্প্রচার এক দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতায় নামেন সাংবাদিককুল ও বিরোধী রাজনীতিকরা। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জরুরি অবস্থা জারিরও অভিযোগ তোলেন অনেকে। গত কাল এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এনডিটিভি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে দেখাও করেন এনডিটিভি-র কর্ণধার প্রণয় রায়। ওই বৈঠকের পরে সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে সরকার।
আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানির শুরুতেই বিচারপতি এ কে সিক্রি বলেন, ‘‘এখন আর এই শুনানির প্রয়োজন আছে কি? আমরা তো সংবাদপত্রে পড়লাম যে নিষেধাজ্ঞায় ইতিমধ্যেই স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।’’ অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি বলেন, ‘‘এখনই এই শুনানি আর জরুরি নয়। কারণ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার আবেদন কেন্দ্র খতিয়ে দেখছে।’’ তাতে সায় দেন এনডিটিভি-র আইনজীবী ফলি নরিম্যানও। তাই ঠিক হয় শুনানি হবে ৫ ডিসেম্বর। কিন্তু কংগ্রেস এ নিয়ে সরকারকে এত সহজে রেহাই দিতে রাজি নয়। গত কাল বেঙ্কাইয়া নায়ডু টুইটারে দাবি করেন, এনডিটিভি কর্তৃপক্ষের আর্জি মেনেই তিনি এক দিন সম্প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন। কিন্তু আজ প্রণয় রায় টুইটারে দাবি করেছেন, সব সংবাদমাধ্যম এক জোট হয়েই কেন্দ্রকে নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখতে বাধ্য করেছে। ফলে আক্রমণের আরও সুযোগ পেয়ে যায় কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী কপিল সিব্বলের দাবি, মোদী সরকারের সঙ্গে কেউ এক মত না হলেই তার গায়ে দেশদ্রোহীর তকমা এঁটে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার সময়েই নরেন্দ্র মোদী তৎকালীন সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। এই সরকারের ভাষায় সেটা দেশদ্রোহ নয় কি? তদন্তে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতার নামে আইএসআইকে পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটি ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া হল? সেটা দেশদ্রোহ নয়?’’