নয়ডার ডেন্টাল কলেজে ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় ক্রমশ বিক্ষোভের আঁচ বাড়ছে তাঁর সহপাঠী এবং কলেজের অন্য পড়ুয়াদের মধ্যে। অভিযুক্ত দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জোরালো হচ্ছে। ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের বাইরে প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
শুক্রবার কলেজের হস্টেল থেকে গুরুগ্রামের তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তরুণীর সহপাঠীরা। তাঁদের অভিযোগ, দুই অধ্যাপক ছোট ছোট বিষয়ে পড়ুয়াদের অপমান করতেন। নানা ভাবে হেনস্থা করতেন। তাঁদের সহপাঠী পড়াশোনায় যথেষ্ট ভাল ছিলেন। কিন্তু তাঁর পরেও তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হত। তরুণীকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হত। সূত্রের খবর, ওই ডাক্তারি ছাত্রী ডায়েরিতে যাবতীয় ঘটনা লিখে রাখতেন। লিখতেন, কী ভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হয়, অপমানিত হয়ে কী ভাবে তাঁর মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটছে, অবসাদে ভুগতে শুরু করেছেন ইত্যাদি। পুলিশ সেই ডায়েরিটি উদ্ধার করেছে।
সহপাঠীদের দাবি, তরুণীকে প্রায়শই এক অধ্যাপক হুমকি দিয়ে বলতেন, ‘‘তুই কী ভাবে পাশ করিস, আমি দেখে নেব!’’ শুধু তা-ই নয়, দিনের পর দিন এ ভাবেই সকলের সামনে ওই তরুণীকে হেনস্থা করতেন ওই অধ্যাপক। অপমানিত হওয়ার পর তরুণী যখন কাঁদতেন, ওই অধ্যাপকই আবার তাঁকে তিরস্কার করে বলতেন, ‘‘ভাল ভাবে কাঁদতেও পারিস না, তোর থেকে তো আমি ভাল কাঁদতে পারব।’’ অনেক ক্ষেত্রে হেসে হেসে কথাগুলি বললেও, সেই কথার মধ্যে যে শ্লেষ মেশানো থাকত, তা কারও বুঝতে অসুবিধা হত না বলেও দাবি তরুণীর সহপাঠীদের। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, তাঁদের সহপাঠী পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। মৌখিক পরীক্ষাও পাশ করেন। গড়পড়তা পড়ুয়াদের তুলনায় ভাল ছাত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু যাঁরা দাবি করছেন, তরুণী পাশ করতে পারেননি, তাঁর সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন।
তবে এই প্রথম নয়, এই কলেজে আগেও এই ধরনের ঘটনার শিকার হয়ে এক ছাত্রী আত্মঘাতী হন বলেও পড়ুয়াদের একাংশের দাবি। ২০২২ সালে অরুণাচল প্রদেশের এক তরুণী কলেজ চত্বরেই আত্মহত্যা করেন। সেই সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত কারণে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছিলেন।