কে চন্দ্রশেখর রাও
দিল্লিতে আঞ্চলিক দলগুলির সরকার গড়ার পরিকল্পনাকে সামনে রেখে ডিএমকের শীর্ষ নেতা এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা টিআরএস নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও। তবে দিল্লিতে ফেডারেল ফ্রন্টের সরকার গড়তে কেসিআরের দ্বিতীয় দফার প্রয়াসও শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে। সাত দিন অপেক্ষায় রাখার পরে স্ট্যালিন আজ কেসিআরের সঙ্গে দেখা করলেও জানিয়েছেন, কংগ্রেসের জোট ছাড়ার কথা এই মুহূর্তে ভাবছেন না তিনি।
সোমবার বিকেলে চেন্নাইয়ের আলওয়ারপেটে স্ট্যালিনের বাসভবনে প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে কেউই তাঁদের বর্তমান অবস্থান থেকে সরে আসেননি। ডিএমকে এই বৈঠককে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হিসেবে তুলে ধরেছে। কেসিআরও সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেননি। তবে সূত্রের খবর, বৈঠকে কেসিআর ইউপিএ ছেড়ে স্ট্যালিনকে ফেডারেল ফ্রন্টের জন্য উদ্যোগী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ডিএমকে নেতা তাঁকে জানিয়েছেন, ভোটের ফলাফলের পরেই স্পষ্ট হয়ে যাবে দিল্লিতে আদৌ আঞ্চলিক দলের সরকার গড়া সম্ভব কিনা। তিনি যে কংগ্রেসের শরিক হিসেবেই ভোটে লড়েছেন, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন করুনানিধি-পুত্র।
নোটবন্দি, জিএসটির মতো বিভিন্ন বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থন করলেও এ বারের লোকসভা ভোটে তেলঙ্গানায় কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিয়ে লড়েছেন কেসিআর। তিনি মনে করছেন, আঞ্চলিক দলগুলি এ বার একজোট হয়ে এগোলে দিল্লিতে তাঁদের সরকার গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, বিজেপি কিংবা কংগ্রেসের কেউই একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। এই উদ্দেশ্য নিয়েই গত সপ্তাহে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে দেখা করেন কেসিআর। সপ্তাহখানেক আগেই স্ট্যালিনের থেকেও সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তামিলনাড়ুতে উপনির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত ডিএমকে নেতা তাঁর সঙ্গে এত দিন দেখা করেননি। এ দিন টিআরএসের মহাসচিব কে কেশব রাওকে নিয়ে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করতে যান কেসিআর। সেই সময়ে উপস্থিত ছিলেন ডিএমকে নেতা এ রাজা এবং টি আর বালু। সূত্রের খবর, ভোট প্রচারের শুরুতেই রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার যে কথা বলেছিলেন স্ট্যালিন, সেই অবস্থান থেকে আজও সরে আসার ইঙ্গিত দেননি তিনি। ডিএমকে-র এক নেতার মন্তব্য, ‘‘আমরা ভোটে লড়ছি কংগ্রেসের শরিক হিসেবে। ফলাফল সামনে এলেই সব সমীকরণ স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
টিআরএস সূত্রের খবর, কেসিআর কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, কেসিআর কেন বেছে বেছে ঘোষিত মোদী-বিরোধী দলগুলির নেতাদের সঙ্গেই দেখা করছেন? আঞ্চলিক দলের সরকার গড়তে তিনি কেন বিজেপির শরিকদের পাশে চাইছেন না? এর আগে কেসিআর নোটবন্দি, জিএসটির মতো বিষয়গুলি সমর্থন করেছেন। ফলে তাঁর প্রস্তাবিত ফেডারেল ফ্রন্টের পিছনে নরেন্দ্র মোদীরই হাত দেখেছেন বিরোধী শিবিরের অনেকে। ভোটের সময়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে সেই তকমা তোলার চেষ্টা করে গিয়েছেন কেসিআর। তবে তাঁর প্রয়াসের দ্বিতীয় দফাতেও আঞ্চলিক দলগুলির কাছে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতার সমস্যা সামনে আসছে।
টিআরএসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘বিজেপি ও কংগ্রেস সব সময়েই রাজ্যের অধিকার খর্ব করতে চায়। এ বার দিল্লিতে আমরা এমন সরকার চাই, যে সরকার রাজ্যগুলির সঙ্কট কাটানোর কথা ভাববে। এই বিষয় নিয়েই আমরা আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলছি।’’ এই বৃহত্তর প্রেক্ষাপট নিয়ে অবশ্য কোনও আঞ্চলিক দলেরই আপত্তি নেই বলে টিআরএস সূত্রের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy