Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা, দাবি শত্রুঘ্নের

আগামী ৬ এপ্রিল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা শত্রুঘ্ন সিনহার।

শত্রুঘ্ন সিনহা। —ফাইল চিত্র।

শত্রুঘ্ন সিনহা। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ১৯:৪৩
Share: Save:

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিনহার। খুব শীঘ্র কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন তিনি। তার আগে জানিয়েছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে। সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন অখিলেশ যাদবও। কিন্তু শেষমেশ বন্ধু লালু প্রসাদের পরামর্শে কংগ্রেসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

আগামী ৬ এপ্রিল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা শত্রুঘ্ন সিনহার। তার আগে রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেন, “তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব এবং আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল-এর মতো অনেকেই তাঁকে নিজেদের দলে টানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যেন তেন প্রকারে পটনা সাহিব থেকেই দাঁড়াতে চেয়েছিলাম আমি। তাই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”

শেষমেশ কংগ্রেসকেই কেন বাছলেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন শত্রুঘ্ন। তাঁর কথায়, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, বল্লভভাই পটেল, জওহরলাল নেহরু এবং নেহরু-গাঁধী পরিবারের মহান নেতারা কংগ্রেস করেছেন। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কংগ্রেসের। সঠিক অর্থে জাতীয় দল বলতে যা বোঝায়, কংগ্রেস আসলে তাই। ভেবেচিন্তে তাই তাদের শিবিরে যাওয়ার মনস্থির করেন তিনি। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রধান লালুপ্রসাদের পরামর্শও কাজে লেগেছে বলে জানান বিহারি বাবু। তিনি বলেন, “লালুপ্রসাদের সঙ্গে পারিবারিক বন্ধুত্ব আমাদের। তিনিও কংগ্রেসে যাওয়ার পরামর্শ দেন আমাকে। রাজনৈতিক ভাবে পাশে থাকবেন বলে ভরসা দেন। ওঁর অনুমতি পেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।”

আরও পড়ুন: কেরলে রাহুলের হার নিশ্চিত করতে ঝাঁপাবে বামেরা, হুঁশিয়ারি কারাটের​

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে ‘মহাজোট’গড়েছে কংগ্রেস। তাতে রাজ্যের ৪০টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে প্রার্থী দেবে আরজেডি। পটনা সাহিব সমেত ৯টিতে কংগ্রেস। পটনা সাহিব কংগ্রেসের কাছে যাওয়াও, রাহুল গাঁধীর দলের সঙ্গে তাঁর হাত মেলানোর অন্যতম কারণ বলে জানান শত্রুঘ্ন।

২০০৯ সাল থেকে বিহারের পটনা সাহিবে বিজেপির হয়ে জয়ী হয়ে আসছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। ২০১৪ সালেও ওই আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হন। তবে মোদী ঝড়ে ভর করেই ওই আসনে জয়ী হন বলে দাবি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু তা মানতে নারাজ শত্রুঘ্ন। বরং বিজেপি ছাড়ার পরও পটনা সাহিবে তাঁর জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আত্মবিশ্বাসীতিনি। তিনি মনে করেন,জনসভায় দাঁড়িয়ে তাঁর হয়ে বক্তৃতা করা জন্য তাবড় নেতাদের টেনে আনেননি তিনি। মেয়ে সোনাক্ষী তারকা-অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও, একবারের জন্য কোথাও তাঁকে নিয়ে প্রচারে যাননি। দলও কোনও ভাবে সাহায্য করেনি তাঁকে। সম্পূর্ণ ভাবে নিজের যোগ্যতায় পটনা সাহিব থেকে ২০১৪-য় জয়ী হন তিনি। এ বার আরও বেশি ব্যবধানে জয়ী হবেন।

অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে মন্ত্রী ছিলেন শত্রুঘ্ন। আবার লালকৃষ্ণ আডবাণী ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। তবে বরাবরই মোদী-শাহ জুটির বিরোধী তিনি। এমনকি প্রকাশ্যে একাধিকবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনাও করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যার জেরে গত কয়েক বছরে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীতালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় পটনা সাহিবে প্রার্থী করা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে। তার পরই দল ছাড়বেন বলে ঘোষণা করেন শত্রুঘ্ন সিনহা। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও পর্যন্ত দল থেকে ইস্তফা না দিলেও, কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পাকা হয়ে গিয়েছে তাঁর। কিন্তু দীর্ঘদিন বিজেপিতে যুক্ত থাকার পর দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া যন্ত্রণাদায়ক বলে জানান শত্রুঘ্ন। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে কটাক্ষ করে ‘ওয়ান ম্যান শো’ এবং ‘টু-ম্যান আর্মি’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর দাবি, “দলে আগে গণতন্ত্র ছিল। এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। বাজপেয়ীজির সময়ে সকলের মতামত নেওয়া হত। এখন তা হয় না।”

আরও পড়ুন: দিল্লিতে কি একাই লড়বে কংগ্রেস? ঘোষণা আজ বা কাল​

এ বারের নির্বাচনে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার গাঁধীনগরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে তা নিয়ে নিশ্চিন্ত বলে জানিয়ে দেন অমিত শাহও। কিন্তু রাহুল গাঁধীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সবরকম যোগ্যতা রয়েছে বলে মত শত্রুঘ্ন সিনহার। তিনি জানান, বছরের পর বছর ধরে নিজেকে প্রমাণ করেছেন রাহুল। রাফাল দুর্নীতি নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন। মানুষের সমর্থন পেলেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখা যেতে পারে তাঁকে।

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE