Advertisement
E-Paper

লাল কার্পেটে চক্কর কেটে গুহার গদিতে

কেদারনাথ মন্দিরে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। জনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ করে আধ ঘণ্টা ধরে মন্দিরের ভিতরে পুজো দিয়েছেন। তার পরে কার্পেটে হেঁটে মন্দির প্রদক্ষিণ করেছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০২:১৪
কেদারনাথ মন্দির থেকে বেরোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। পরে মন্দির থেকে একটু দূরে একটি গুহায় ধ্যান। শনিবার।

কেদারনাথ মন্দির থেকে বেরোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। পরে মন্দির থেকে একটু দূরে একটি গুহায় ধ্যান। শনিবার।

পায়ের নীচে লাল কার্পেট, কাঁধ থেকে বাঘছাল ছাপ চাদর লুটোচ্ছে কার্পেটে। শরীর মোড়া আলখাল্লা ধাঁচের পাহাড়ি পোশাকে, মাথায় হিমাচলি টুপি। গেরুয়া কোমরবন্ধ। জোড়হাত। তিনি হাঁটছেন।

কেদারনাথ মন্দিরে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। জনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ করে আধ ঘণ্টা ধরে মন্দিরের ভিতরে পুজো দিয়েছেন। তার পরে কার্পেটে হেঁটে মন্দির প্রদক্ষিণ করেছেন। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবী যা দেখে বললেন, ‘‘কখনও দেখেছেন, কেউ লাল কার্পেট পেতে ধর্ম করতে যায়?’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘‘প্রকৃত ভক্ত ‘বাবা’-র কাছে যান অহং বিসর্জন দিয়ে। লাল কার্পেট বিছিয়ে নয়।’’

মন্দির-পর্ব সেরে চড়াই ভেঙে এক গুহায় প্রধানমন্ত্রী ধ্যানে বসেছেন বলে জানা গেল দুপুরের আগেই। সেই গুহায় ধোপদুরস্ত গদি-পাতা তক্তপোশে ‘ধ্যানমগ্ন’ মোদীর ছবি ভাইরাল হল মুহূর্তে। দেখা গেল, কাঠের জানলাও রয়েছে গুহায়। দেওয়ালে জামাকাপড় টাঙানোর হুক। অনেকে বললেন, মোদী যে গেরুয়া চাদরটায় গলা থেকে সর্বাঙ্গ ঢেকে ধ্যানে বসেছেন, সম্ভবত সেটাই এত ক্ষণ কোমরে বাঁধা ছিল।

সন্ধের আগে ধ্যানভঙ্গ হয় মোদীর। গুহা থেকে বেরিয়ে কেদারনাথের আরতি দেখেন। আজ রাতে গুহাতেই রইলেন। কাল যাবেন বদ্রীনাথ দর্শনে।

আজ সকালে দেহরাদূনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে সোজা কেদারনাথে। আসার পথে কপ্টার থেকে তোলা বরফঢাকা হিমালয়ের ছবি টুইটারে পোস্ট করেন মোদী। খানিক পরেই একটি ভিডিয়ো। যাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরাখণ্ডের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে কেদারনাথ সংস্কার নিয়ে কথাবার্তা বলছেন মোদী। ২০১৩ সালের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত তীর্থক্ষেত্রের হাল ফেরাতে শুরু হয়েছিল সরকারি প্রকল্প। মোদী আজ ক্যামেরার সামনে তার কাগজপত্র উল্টেপাল্টে দেখেছেন।

বিরোধীরা এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। কমিশন আগাম বলেছিল, প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে তারা জানিয়ে দিয়েছে, এই সফরে যেন নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ না-হয়। কিন্তু বিরোধীরা মনে করাচ্ছেন, শেষ দফার ভোটের আগে এখন ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’ চলছে। অথচ মোদী শুধু যে ‘কাজ দেখাচ্ছেন’ তা-ই নয়, আজ কেদারনাথে এবং কাল (ভোটের দিনে) বদ্রীনাথে হিন্দুত্বের প্রচারও করে চলেছেন। বিজেপি সূত্রের দাবি, এটি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফর। ফলে উন্নয়নের কাজকর্ম তদারক করতেই পারেন তিনি।

ভিডিয়োতেই ধরা পড়ে, মোদীর হাতে একটি লাঠি। যে লাঠি হাতে নিয়ে মন্দিরকে পিছনে রেখে মোদীর প্রণামের ছবি টুইট করে আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ লিখেছেন, ‘‘বোলো ক্যামেরা ভগবান কী জয়!’’ কংগ্রেস নেতাদের মতে, ছবিটা প্রতীকী। গত বার কেদারনাথে লাঠি হাতে দেখা যায়নি মোদীকে। এ বার কি মুখে ‘তিনশো আসনের’ কথা বলেও শরিকের ‘লাঠির’ ভরসায় রয়েছেন তিনি! আর ভোটের আগে নিজের কেন্দ্র বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দিরে যাওয়া হল না বলেই কি কেদারনাথে গিয়ে শিব-বন্দনার ছবি তুলে ধরতে হল তাঁকে? কংগ্রেস মনে করিয়েছে, ২০১৫ সালে রাহুল গাঁধী হেঁটেই উঠেছিলেন কেদারনাথে। মোদী গেলেন আকাশপথে। তবে বিজেপি নেতাদের দাবি, আজ দু’কিলোমিটারের মতো হেঁটেছেন মোদী! সব রাস্তায় লাল কার্পেট ছিল না। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল খোঁচা দিলেন, ‘‘একেবারে ২৩ তারিখে ভোটের ফল দেখে ঝোলা-কম্বল নিয়ে গেলে পারতেন। সেই তো যেতেই হবে!’’

Lok Sabha Election 2019 Narendra Modi Kedarnath Temple Meditation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy