ছবি রয়টার্স।
চারদিকে শুধু গমখেত। মাঝে মাঝে সংকীর্ণ সিমেন্টের রাস্তা। গরু চরছে। গাড়ি বলতে শুধু গরুর গাড়ি। উত্তরপ্রদেশের অখ্যাত গ্রাম নয়াবাঁস। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। তখনও উৎসবে-পরবে মিলেমিশে দিব্যি ছিল গোটা গ্রাম।
তবে গত দু’বছরে স্পষ্ট দু’টো ভাগে ভেঙে গিয়েছে গ্রাম। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্র-রাজ্যে সরকার বদলের স্পষ্ট ছাপ পড়েছে গ্রামে। অবস্থা এমনই এ বারের ভোটে বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফিরলে, গ্রাম ছাড়তে হবে বলেই আশঙ্কা সংখ্যালঘুদের।
২০১৪ সালে ভোটে জিতে দেশে ক্ষমতায় আসে মোদী সরকার। ২০১৭ থেকে উত্তরপ্রদেশেও শুরু হয়েছে যোগী-রাজ। গত দু’বছরে গ্রাম ছেড়েছে অসংখ্য সংখ্যালঘু পরিবার। গ্রামে পাউরুটি-বিড়ির দোকান চালান গুলাম আলি। বললেন, ‘‘মোদী আর যোগী মিলে সব গোলমাল করে দিয়েছেন। দুই সম্প্রদায়কে আলাদা করাই যেন এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য ওদের। আগে এমনটা কখনও ছিল না। অবস্থা এমনই যে, আমরা গ্রাম ছেড়ে যেতে চাইছি। কিন্তু সেটা পেরে উঠছি না।’’
গত বছরের শেষের দিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েক জনের বিরুদ্ধে গোহত্যার অভিযোগ জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেন সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কয়েক জন। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দাদের একাংশ। ছোড়া হয় পাথর। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়িতে। ঘটনায় এক পুলিশ অফিসার-সহ দু’জন নিহত হন। সেই আতঙ্ক আজও পিছু ছাড়ে না গ্রামের অনেক বাসিন্দার।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপির মুখপাত্র গোপালকৃষ্ণ আগরওয়ালের অবশ্য দাবি, ‘‘বিজেপি সরকারের জমানায় একটাও দাঙ্গা হয়নি। ফৌজদারি মামলাকে সাম্প্রদায়িক সমস্যা বলে দাগিয়ে দেওয়া কিন্তু অন্যায়।’’
অনেকে অবশ্য বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে যেতে চান না। যেমন ৪২ বছরের আস মহম্মদ। স্বচ্ছল পরিবার। দিল্লির কাছে আর একটি বাড়ি রয়েছে, তবু এখানেই থাকতে চান। গোহত্যা কাণ্ডে ধৃত সইফিকে আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আস। বললেন, ‘‘আমি লড়ছি। ভয় পাচ্ছি না, তবে বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে আমাদের এখানে থাকা আরও কঠিন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy