ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগ ভিত্তিহীন, বিবৃতিদিয়ে জানাল নির্বাচন কমিশন।
বিরোধীরা নালিশ জানিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে এমন একাধিক ভিডিয়ো, যাতে দাবি করা হচ্ছে ইভিএম পাল্টানো বা কারচুপি করার। তার মধ্যেই নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিল, অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। যে ভাইরাল ভিডিয়ো ছড়িয়েছে, তার সঙ্গে ভোটগ্রহণে ব্যবহৃত ইভিএম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। কেন সম্পর্ক নেই, সেই ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।
কিন্তু কেন বিবৃতি দেওয়ার প্রয়োজন হল কমিশনের? কারণ মূলত দু’টি। বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল সামনে আসতেই বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, ইভিএম-এ কারচুপি করা হয়েছিল। এর মধ্যেই মঙ্গলবার দু’টি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যমে। তার একটিতে দেখা যায়, গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে ইভিএম। ভোটগ্রহণের দু’দিন পরে কেন ইভিএম ঢোকানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নও করতে শোনা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি কর্মীদের। একই রকম একটি ভিডিয়ো বিহারের বলেও ছড়িয়েছে। আবার রাতারাতি ইভিএম পাল্টে ফেলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করে মঙ্গলবারই কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বাইশটি বিরোধী দলের নেতা।
তার পরই কমিশনের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘ভোটগ্রহণের পর সমস্ত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট কড়া নিরাপত্তার মধ্যে স্ট্রংরুমে আনা হয়েছে। সেগুলি প্রার্থীর এজেন্ট এবং কমিশনের অবজার্ভারের সামনে দু’টি তালাবন্ধ করে সিল করা হয়েছে। ইভিএম ভিতরে ঢোকানোর পর স্ট্রংরুম তালাবন্ধ করার সময় ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: গরমিল থাকলেই সমস্ত ভিভিপ্যাটের সঙ্গে মেলাতে হবে ইভিএম, নির্বাচন কমিশনে দাবি বিরোধীদের
আরও পড়ুন: ইভিএম কারচুপির অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়
গণনা পর্যন্ত কী ভাবে এই স্ট্রংরুমের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা রাখার চেষ্টা হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে কমিশন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভোটগণনার আগে পর্যন্ত ধারাবাহিক সিসিটিভি পর্যবেক্ষণে রয়েছে স্ট্রংরুমগুলি। প্রতিটি স্ট্রংরুমের সামনে ২৪ ঘণ্টা নিরন্তর প্রহরায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশের জওয়ানরা। পাশপাশি, প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধিরাও সেখানে সারাক্ষণ থাকছেন।’’ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ‘সন্দেহ দূর করতে এবং ভোটগ্রহণের দিন ব্যবহৃত সঠিক ইভিএম-ই যে রাখা হয়েছে, সেটা প্রমাণ করতে গণনা শুরুর আগে কাউন্টিং এজেন্টদের ঠিকানার ট্যাগ, সিল এবং ইভিএমের বিশেষ নম্বর মিলিয়ে দেখে নিতে বলা হবে।’
তা হলে ওই ভিডিয়োগুলি কি মিথ্যা? কমিশন সরাসরি উড়িয়ে দেয়নি। নির্বাচন সদনের কর্তাদের ব্যাখ্যা, ভোটগ্রহণের দিন বুথে যেগুলি ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়, তার বাইরেও রিজার্ভ রাখা হয় অনেক ইভিএম-ভিভিপ্যাট। কোনও বুথে ভোটযন্ত্র বিকল হলে তখন এই রিজার্ভ ইভিএমগুলি ব্যবহার করা হয়। ওই ভিডিয়োয় সেই রিজার্ভ ইভিএম আনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হতে পারে। তবে সেই সঙ্গে এ-ও বলা হয়েছে, ওই রিজার্ভ ইভিএম নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও যদি কারও গাফিলতি থাকে, তা হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
ভোটগণনা ২৩ মে, বৃহস্পতিবার। তার আগে বুধবার থেকেই ইভিএম সম্পর্কিত অভিযোগ জানাতে একটি কন্ট্রোল রুম খুলছে নির্বাচন কমিশন। কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১১-২৩০৫২১২৩। বুধবার বেলা ১১টা থেকে দিল্লিতে নির্বাচন সদনে এই কন্ট্রোল রুম কাজ শুরু করছে। ভোটগণনা পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে, জানিয়েছে কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy