তামিলনাড়ু সরকারের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সংশোধিত আইনের নির্দিষ্ট কিছু ধারার উপর জারি হল অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ! বুধবার মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথন এবং বিচারপতি ভি লক্ষ্মীনারায়ণের অবকাশকালীন বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আইনগুলির যে অংশে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় রয়েছে, সেই সংশোধনীগুলির উপর জারি হয়েছে স্থগিতাদেশ।
এই সংশোধনীগুলি আইনে পরিণত হওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের একটি পর্যবেক্ষণ তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষেই গিয়েছিল। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণকে নিজেদের জয় হিসাবেই ব্যাখ্যা করে এমকে স্ট্যালিনের নেতৃত্বাধীন ডিএমকে সরকার। সংশোধিত আইনও তৈরি করে নেয় তারা। তবে মাদ্রাজ হাই কোর্টে ভিন্ন একটি মামলায় ওই সংশোধিত আইনগুলির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি হল।
বিধানসভায় পাশ হওয়া বেশ কিছু বিল দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যপালের কাছে আটকে থাকায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল তামিলনাড়ু সরকার। পর্যবেক্ষণে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরেও সেই বিল আটকে রাখা বৈধ কাজ নয়। ওই পর্যবেক্ষণকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন স্ট্যালিন। তার পরেই আটকে থাকা ১০টি বিলকে আইনে পরিণত করে তামিলনাড়ু সরকার। এর মধ্যে কিছু আইন রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত। ওই আইনগুলির মাধ্যমে স্ট্যালিন সরকার সে রাজ্যের সরকারি ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবে।
এরই মধ্যে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সংশোধিত আইনগুলির বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন বিজেপি কর্মী কে বেঙ্কটচলপতি। মামলাকারীর দাবি, ওই আইনগুলি বিশ্ববিদ্যালয় ম়ঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর বিধির পরিপন্থী। উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসির যে নিয়ম রয়েছে, তা ওই সংশোধিত আইনগুলিতে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ মামলাকারীর।
আরও পড়ুন:
মামলাকারীর বক্তব্য, ইউজিসির নিয়ম অনুসারে উপাচার্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটি ‘সার্চ কমিটি’ রাখা হয়, সেখানে ইউজিসির এক জন প্রতিনিধি থাকেন। শেষে ওই নিয়োগে অনুমোদন দেন আচার্য। সংশোধিত আইনগুলির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ মামলাকারীর। যদিও তামিলনাড়ু সরকারের বক্তব্য, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজস্ব বিধিবদ্ধ নিয়মে পরিচালিত হয়। এ ক্ষেত্রে ইউজিসির নিয়ম মানার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
তামিলনাড়ু সরকারের তরফে এ-ও জানানো হয় যে এই মামলা নিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। যেহেতু এই সংক্রান্ত মামলা ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, তাই এই মামলাটিকেও সেটির সঙ্গে যুক্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত সংশোধিত আইনের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট অংশগুলির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারির সিদ্ধান্ত নেয় হাই কোর্ট।