তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে গর্জে উঠলেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ।
‘প্রশ্নঘুষ’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা শুক্রবার জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি।
লোকসভা থেকে বেরিয়ে মহুয়া বলেন, ‘‘লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হল, যা লোকসভার সকল সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনও উপহার নিয়েছি, তার কোনও প্রমাণ নেই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘মোদী সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।’’
লোকসভা থেকে বহিষ্কারের পর এ বার তাঁর কাছেও সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা পাঠানো হবে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মহুয়া। তিনি বলেন, ‘‘এ বার আমার কাছে সিবিআই আসবে। ছ’মাস আমাকে সিবিআই দিয়ে হেনস্থা করা হবে।’’
শুক্রবার লোকসভায় তৃণমূল, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের তরফে মহুয়াকে নিজের বক্তব্য জানানো এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই অনুরোধও রাখেননি স্পিকার। অতীতের দৃষ্টান্ত টেনে তিনি জানান, আগেও এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত সদস্য কিছু বলার সুযোগ পাননি। পাশাপাশি বিজেপির যুক্তি ছিল, মহুয়া আগে নিজের কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তিনি সভাকক্ষ থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান।
অন্য দিকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এক জন মহিলাকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে ভাবে হেনস্থা করল, তাতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল। দল মহুয়ার পাশে ছিল, আছে। বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি প্রমাণিত।’’
মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁর দলের অন্যান্য সাংসদও। বিজেপি সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘সংসদ আইন অথবা সংবিধানের ঊর্ধ্বে নয়। সংসদ নিজেও সংবিধানসৃষ্ট। বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতার অহমিকায় ওঁকে বহিষ্কার করেছে।’’ অন্য আর একটি বার্তায় তিনি লেখেন, ‘‘যদি মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই মামলা দায়ের করে তবে তদন্তের আওতায় আনতে হবে হীরানন্দানিকেও। কারণ, তিনিই নাকি ঘুষ দিয়েছেন!’’ বস্তুত, শুক্রবার আগাগোড়াই কল্যাণকে এ বিষয় নিয়ে অত্যন্ত সরব হতে দেখা গিয়েছে সংসদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy