মৃতের নাম রোহিনা (২৫) এবং অভিযুক্তের নাম বিনীত। প্রতীকী ছবি।
আবার শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া দিল্লিতে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, খুনের পর প্রেমিকার দেহ বন্ধুদের সাহায্যে ১২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ফেলে আসেন অভিযুক্ত প্রেমিক। গত ১২ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মৃতের নাম রোহিনা (২৫) এবং অভিযুক্তের নাম বিনীত। ঘটনার পর থেকেই পলাতক বিনীত এবং তাঁর বন্ধু।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জয় তিরকি জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিল গভীর রাতে এক যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের কাছে ফোন আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ ওই মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে যুবতীকে।
এর পরই তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে গতি আনতে ৫০ জন আধিকারিকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়। কাছাকাছি এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা শুরু করে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলের অন্তত ১২ থেকে ১৩ কিমি দূরে একটি মোটরবাইককে শনাক্ত করে। সিসিটিভ ফুটেজে দেখা যায়, বিনীত তার কাঁধে কিছু একটা চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পাশে পাশে যাচ্ছিল একটি বাইকও। বিনীতের পিছনে এক মহিলাও হাঁটছিলেন। তদন্ত চলাকালীন পুলিশ জানতে পারে, সিসিটিভি ভিডিয়োর ওই মহিলার নাম পারুল এবং তিনি অভিযুক্ত বিনীতের বোন। এর পরই পারুলকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় পারুল এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তাঁর ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়েই খুন করা হয়েছিল রোহিনাকে। তিনি আরও জানান, দিল্লিতে রোহিনা এবং বিনীত একত্রবাস করতেন। চার বছর আগে তাঁরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সম্প্রতি বিয়ের জন্য বিনীতকে চাপ দিচ্ছিলেন রোহিনা। আর তা নিয়েই ১২ এপ্রিল দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এর পরই রাগের মাথায় রোহিনাকে খুন করেন বিনীত। এর পর বিনীত তার বন্ধুকে দেহ লোপাটের জন্য ডেকে পাঠান। ১২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসা হয় সেই দেহ। স্বীকারোক্তির পর পুলিশ পারুলকে গ্রেফতার করে।
বিনীত এবং তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে তদন্তদল তাঁদের গতিবিধির উপর নজর রাখার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে খুন করেন তাঁরই প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। এর পর এক বিদেশি ওয়েব সিরিজ় দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে বাড়ির পাশের দোকান থেকে কিনে আনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। অভিযোগ, এর পর ১৮ দিন ধরে ছতরপুর জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন আফতাব। তদন্তে নেমে পুলিশ আফতাবকে গ্রেফতার করে। তিনি বর্তমানে জেলবন্দি। সেই ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া গেল রোহিনা হত্যাকাণ্ডের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy