Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাওবাদী নিশানায় সিআরপি, হত ১৪

ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমন অভিযানের গত কালই ঢালাও প্রশংসা করেছিলেন রমন সিংহ। মাওবাদী সমস্যা অনেকটাই নির্মূল করা গিয়েছে বলে গত সপ্তাহে দাবি করেছিলেন সিআরপিএফ প্রধান-সহ কেন্দ্রের কর্তারাও। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রমন সিংহের রাজ্যে সেই সিআরপি-র উপরেই বড় ধরনের হামলা চালাল মাওবাদীরা। আজ ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলায় মাওবাদী হামলায় দুই অফিসার-সহ মোট ১৪ জন সিআরপি জওয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন জওয়ান। সিআরপিএফ-এর দাবি, সংঘর্ষে জখম হয়েছে বেশ কিছু মাওবাদীও।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমন অভিযানের গত কালই ঢালাও প্রশংসা করেছিলেন রমন সিংহ। মাওবাদী সমস্যা অনেকটাই নির্মূল করা গিয়েছে বলে গত সপ্তাহে দাবি করেছিলেন সিআরপিএফ প্রধান-সহ কেন্দ্রের কর্তারাও। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রমন সিংহের রাজ্যে সেই সিআরপি-র উপরেই বড় ধরনের হামলা চালাল মাওবাদীরা।

আজ ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলায় মাওবাদী হামলায় দুই অফিসার-সহ মোট ১৪ জন সিআরপি জওয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন জওয়ান। সিআরপিএফ-এর দাবি, সংঘর্ষে জখম হয়েছে বেশ কিছু মাওবাদীও।

আজ দুপুর তিনটে নাগাদ সুকমা জেলার জঙ্গলে ঘেরা চিন্তলগুফা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে টহল দিয়ে ফিরছিল সিআরপি বাহিনী। সব মিলিয়ে মোট ৬০ জন সদস্য ছিলেন সেই দলে। কুসুমপাল গ্রামের কাছে তাঁরা যখন পৌঁছন, একে-৪৭ থেকে আচমকা ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামবাসীদের ঢাল বানিয়ে গুলি চালাচ্ছিল মাওবাদীরা। ফলে প্রথমে পাল্টা গুলিও চালাতে পারেনি বাহিনী। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় তারা। পাল্টা গুলি চালালে মাওবাদীরা পিছু হটে।

নয়াদিল্লি থেকে সিআরপিএফের আইজি (অপারেশন) জুলফিকার হাসান আনন্দবাজারকে জানান, গত ১৬ নভেম্বর থেকে ওই এলাকায় মাওবাদীদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে। সঙ্গে রয়েছে আইটিবিপি আর বিএসএফ বাহিনীও। গত ২১ নভেম্বর ওই একই এলাকায় মাওবাদী হামলায় জখম হন কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাঁচ জওয়ান। বায়ুসেনার একটি কপ্টারের উপরও হামলা চলে। তার পরেই ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান জোরদার হয়। আজ যখন পায়ে হেঁটে তল্লাশি অভিযান শেষ করে জওয়ানরা ফিরে আসছিলেন, তখনই আচমকা হামলা চালায় মাওবাদীরা। যা দেখে পুলিশের ধারণা, কয়েক দিন ধরে রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই হামলা চালানো হয়েছে। মাওবাদীরা জানত যে কখন, কোন এলাকা দিয়ে জওয়ানরা ফিরবেন। সেই মতোই হামলা চলে।

নিহত ১৪ জওয়ানের মধ্যে ডেপুটি কম্যান্ডান্ট বি এস বর্মা ও অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট রাজেশ কাপুরিয়া নামে দুই অফিসার রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাওবাদী দমন অভিযানের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল আর কে ভিজ। বাকি জওয়ানদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আজকের সংঘর্ষে নিহত ও আহত সিআরপিএফ জওয়ানদের পায়ে হেঁটে উদ্ধার করতে হয় বলে জানিয়েছেন ভিজ। কারণ, প্রত্যন্ত ওই এলাকায় হেলিকপ্টার নামানোর জায়গা নেই। তা ছাড়া, আগের বারের মতো আজও কপ্টারে হামলার আশঙ্কা ছিল। তাই আর নতুন কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি সরকার। আজকের হামলায় তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, “রাষ্ট্রদোহী এই হামলার নিন্দা করার জন্য কোনও ভাষাই যথেষ্ট নয়।” ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে বলেও টুইটারে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

রাজনাথ সিংহ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আজ বলেন, “মাওবাদীরা কাপুরুষের মতো কাজ করেছে। সাধারণ মানুষকে ঢাল করা হয়েছে বলেই আজ আমাদের এত জন জওয়ানের মৃত্যু হল।” গোটা পরিস্থিতি নিজে খতিয়ে দেখতে আগামী কাল ছত্তীসগঢ় যাচ্ছেন তিনি। মাওবাদী হামলার নিন্দা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সনিয়া বলেছেন, “আশা করি আহতদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে সরকার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE