Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Migrant Workers

ভিন্ রাজ্য থেকে ভোট দিলে হবে ক্ষমতায়ন: কেন্দ্র

ভিন্ রাজ্য থেকে ‘রিমোট ভোটিং মেশিনে’ ভোটদান সংক্রান্ত একটি মডেল সরকারকে তৈরি করে দিয়েছে ‘টিস’ (টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস) নামের একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা।

Picture after giving vote

বিরোধীদের বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিকের সংজ্ঞা কী, তাঁদের সংখ্যাই বা কত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রতীকী ছবি।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৬
Share: Save:

ভিন্‌ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকেরা তাঁদের কাজের জায়গা থেকে ভোট দেওয়ার সুবিধে পেলে তাঁদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে বলে মনে করে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

ভিন্ রাজ্য থেকে ‘রিমোট ভোটিং মেশিনে’ ভোটদান সংক্রান্ত একটি মডেল সরকারকে তৈরি করে দিয়েছে ‘টিস’ (টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস) নামের একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা। আর সেটি তৈরির কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সংস্থার স্কুল অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর ডিন অশ্বিনীকুমার। তাঁর বক্তব্য, “যে সব দল এই ভোট ব্যবস্থার বিরোধিতা করছে, তারা লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিকের উপরে অন্যায় করছে। বিশেষ করে যাঁরা দলিত, জনজাতি এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ভুক্ত। কারণ এই সব সম্প্রদায় থেকেই বেশিরভাগ শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন।”

বিরোধীদের বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিকের সংজ্ঞা কী, তাঁদের সংখ্যাই বা কত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সন্দেহ, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে ভোটে জিততেই বিজেপি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কর্মস্থল থেকে ভোটদানের ব্যবস্থা করতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন চাইছে, ভিন্ রাজ্য থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকেরা ‘রিমোট ভোটিং মেশিন’-এর মাধ্যমে নিজেদের লোকসভা বা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট দিন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রশ্ন, সেখানে যে তাঁদের উপরে চাপ তৈরি করে ভোট দেওয়ানো হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?

এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজ করছেন সমাজবিজ্ঞানী এবং অধ্যাপক অশ্বিনীকুমার। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের তো ধারণা পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারলে তাঁদের নিজ রাজ্যে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের কাছে রাজনৈতিক মূল্য বাড়বে। তাঁদের প্রতি বৈষম্য কমবে। আবার যে রাজ্যে তাঁরা কাজ করছেন সেখানে তাঁদের প্রতি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকসুলভ আচরণ করা বন্ধ হবে। মহিলাদেরও ক্ষমতায়ন হবে। এর একটা প্রভাব পড়বে সংসদ থেকে পঞ্চায়েত স্তরের নির্বাচনে।”

পরিযায়ী শ্রমিকের সংজ্ঞা কী, কত দিন নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য রাজ্যে থাকলে কাউকে পরিযায়ী শ্রমিক বলা হবে, তা নিয়ে সকলেরই প্রশ্ন রয়েছে। অশ্বিনীকুমার জানাচ্ছেন, যাঁরা ছ’মাসের বেশি কোনও জায়গায় থেকে যাচ্ছেন এবং মাথার উপরে ছাদ অর্থাৎ পাকা বাসস্থান রয়েছে, তাঁদের পরিযায়ী হিসেবে গণ্য করা হবে না। সে ক্ষেত্রে অনেকেই ‘ডোমিসাইল সার্টিফিকেট’-ও পেয়ে যান।

ঘরোয়া ভাবে টিস-এর পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, তারা এর আগে বিষয়টি নিয়ে কিছু সমীক্ষা করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে যে, পরিযায়ী শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব বেশি থাকছে। প্রথমত তাঁরা ট্রেনে যাতায়াত করেন যা কেন্দ্রীয় পরিবহণ ব্যবস্থা। রাজ্যে ভোট দিতে পারেন না বলে রাজ্যের রাজনৈতিক দলের কাছে তাঁদের গুরুত্ব নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের বর্তমান নীতি অনুযায়ী তাঁরা যে কোনও জায়গা থেকে রেশন তুলতে পারেন। একশো দিনের কাজের কার্ডও যে কোনও রাজ্যেই ব্যবহার করে কাজ পাওয়া সম্ভব। এই বিষয়গুলি তাঁদের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রিয় করে তুলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Voting Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE