Advertisement
E-Paper

আমাকে পাগল সাজাতে চেয়েছিল মা, আদালতে বললেন ইন্দ্রাণীর ছেলে

কিছু দিন আগে গুয়াহাটিতে সিবিআইয়ের কাছে মিখাইল বরা অভিযোগ করেছিলেন, পৈতৃক সম্পত্তি পেতে তাঁকে প্রাণে মারার চক্রান্ত এখনও চালাচ্ছেন মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। সোমবার থেকে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে ফের শুরু হওয়া শিনা বরা মামলার শুনানিতেও মায়ের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ করেছেন মিখাইল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ১৯:১৮
মিখাইল বোরা।- নিজস্ব চিত্র।

মিখাইল বোরা।- নিজস্ব চিত্র।

৬ মাসের মধ্যে ৫০ কিলোগ্রামেরও বেশি ওজন কমিয়ে আসা ছেলেকে দেখে প্রথমে চিনতেই পারেননি মা! কিন্তু আবেগের যে কোনও জায়গাই নেই মা ও ছেলের সম্পর্কে। সেখানে তো শুধুই চক্রান্ত, হিংসা, অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ।

কিছু দিন আগে গুয়াহাটিতে সিবিআইয়ের কাছে মিখাইল বরা অভিযোগ করেছিলেন, পৈতৃক সম্পত্তি পেতে তাঁকে প্রাণে মারার চক্রান্ত এখনও চালাচ্ছেন মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। সোমবার থেকে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে ফের শুরু হওয়া শিনা বরা মামলার শুনানিতেও মায়ের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ করেছেন মিখাইল।

বিচারক জে সি জাগদালের সামনে মিখাইল দাবি করেন, ইন্দ্রাণী ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না, দু’জনে মিলে মুম্বইয়ের এক মানসিক হাসপাতালে কার্যত বন্দি করে রেখেছিলেন তাঁকে। উদ্দেশ্য ছিল, মানসিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে পাগল ও মাদকাসক্ত প্রতিপন্ন করা। কিন্তু তিনি কখনও মাদক সেবন করেননি। আদালতে মিখাইল জানান, ২০০৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ওই ঘটনা ঘটেছিল। বেঙ্গালুরু থেকে টাকা চাওয়ার জন্য মুম্বইয়ে মায়ের কাছে গেলে সঞ্জীব খন্নার সঙ্গে তাঁর আলাপ করান ইন্দ্রাণী। মিখাইল খেতে না চাইলেও, সঞ্জীব জোর করে তাঁকে মদ খাওয়ান। তার পরেই সংজ্ঞা হারান মিখাইল। জ্ঞান হলে দেখেন বাইকুল্লার মাসিনা হাসপাতালে তিনি হাত, পা বাঁধা অবস্থায় শুয়ে রয়েছেন। মিখাইলের দাবি, চিকিৎসক ইউসুফ মাচিসওয়ালার নেতৃত্বে এক মাস ধরে ওই হাসপাতালে তাঁকে চেয়ারে বেঁধে, ইঞ্জেকশন দিয়ে, মাথা নেড়া করে, বিদ্যুতের শক দিয়ে অমানুষিক অত্যাচার চালানো হয়। সবই মায়ের নির্দেশে। মিখাইল এও জানান, ‘মা’ বলে ডাকলেই রেগে যেতেন ইন্দ্রাণী।

আরও পড়ুন- খুনের অভিযোগে ধৃত প্রাক্তন চ্যানেল কর্তার স্ত্রী​

আরও পড়ুন- শিনার মা এ-ই, দেখিয়ে দিলেন সিদ্ধার্থ​

মিখাইল জানিয়েছেন, তাঁর তিন মাস বয়সেই আসল বাবা সিদ্ধার্থ দাস ও মা ইন্দ্রাণী পৃথক হয়ে যান। পরে মিখাইল দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ইন্দ্রাণী তাঁকে, শিনাকে ও নিজের বাবা-মাকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়ে জানান, ছেলেমেয়েকে আর্থিক সাহায্য করতে তিনি রাজি। কিন্তু মেয়ে যেন মাকে ‘দিদি’ বলে পরিচয় দেয়। মায়ের টাকাতেই বেঙ্গালুরুতে স্কুলে ভর্তি হন মিখাইল। তাঁর ও দিদি শিনা বরার উপরে করা মায়ের বিভিন্ন অত্যাচার ও শিনা হত্যার দিনের ঘটনাও তুলে ধরেন মিখাইল।

সোমবার আদালতে ঢোকার পরে ইন্দ্রাণী প্রথমে মিখাইলকে চিনতে পারেননি। নিজের নাম বলায় ইন্দ্রাণী তাঁকে চিনতে পারেন। মিখাইল আদালতের বাইরে জানান, নিয়মিত শরীরচর্চা ও কড়া ডায়েটের ফলেই তাঁর এই চেহারা হয়েছে।

মিখাইল আরও জানান, তাঁর জীবনে এখন প্রেম এসেছে। তাই আগের অভিশপ্ত সময়গুলো যতটা সম্ভব ভুলে থাকতে চান। ইন্দ্রাণীর চাপে মিখাইল ও শিনাকে দত্তক নিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী (আসল নাম পরী বরা)-র বাবা উপেন্দ্র বরা। শিনা বরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসার পরে উপেন্দ্রবাবু ও ইন্দ্রাণীর মা দুর্গারানিদেবী শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে দু'জনেরই মৃত্যু হয়েছে। ২০১৬ সালে বাবার শ্রাদ্ধ করতে গুয়াহাটি আসার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছিলেন ইন্দ্রাণী। কিন্তু মিখাইল তাতে তীব্র আপত্তি জানান। ফলে ইন্দ্রাণীর আসা হয়নি। মুম্বইয়ে মিখাইল বলেন, "আমি চাই না ওই বাড়িতে কখনও ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের পা পড়ুক। ঠাকুরদা ও ঠাকুমাকে আমিই চিরকাল দেখভাল করেছি। তাই তাঁদের শ্রাদ্ধ করার অধিকার একমাত্র আমারই ছিল।"

Indrani Mukhopadhyay Mikhai Bora CBI Court ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy