উড়ালপুলের উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটছে ক্যাশ ভ্যানটি। আচমকা উড়ালপুলের মাঝে তার পথ আটকায় দু’টি গাড়ি। তার পরে সেই গাড়িগুলি থেকে নেমে আসেন পাঁচ-ছ’জন। সোজা ক্যাশ ভ্যানের কাছে গিয়ে তাঁরা নিজেদের ‘আরবিআই কর্তা’ বলে পরিচয় দেন! তার পরেই ওই ভ্যানে থাকা সাত কোটি টাকা ডাকাতি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র ৩০ মিনিটে।
জানা গিয়েছে, ওই ক্যাশ ভ্যানে তিনটি ব্যাঙ্কের নগদ ছিল। ওই টাকা নিয়ে এটিএমে যাওয়া হচ্ছিল। ভ্যানে চালক ছাড়াও ছিলেন তিন কর্মী। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই ক্যাশ ভ্যানটিকে দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর এক উড়ালপুলের উপর আটকানো হয়। দুষ্কৃতীরা নিজেদের ‘আরবিআই কর্তা’ বলে পরিচয় দিয়ে কর্মীদের জানায়, আরবিআইয়ের নির্দেশিকা লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই কারণে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে, তাই কর্মীদের যেতে হবে থানায়।
দুষ্কৃতীদের কথা বিশ্বাস করে নেন ওই ক্যাশ ভ্যানে থাকা তিন কর্মী। তাঁদের নিয়ে একটি গাড়িতে ওঠে দুই দুষ্কৃতী। বাকিদের মধ্যে দু’জন উঠে পড়ে ক্যাশ ভ্যানে। বাকিরা ছিল মারুতিতে। তার পরেই তিনটি গাড়ি রওনা দেয় থানার উদ্দেশে। কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পরে দুই গাড়ির রাস্তা ভাগ হয়ে যায়। মারুতির পিছন পিছন চলে যায় ক্যাশ ভ্যানটি। আর অন্য গাড়িতে ছিলেন ওই ভ্যানের তিন কর্মী।
আরও পড়ুন:
অভিযোগ, কিছু পথ যাওয়ার পর গাড়ি থেকে তিন কর্মীকে নেমে যেতে বলা হয়। জানানো হয়, তাঁরা যেন থানায় পৌঁছে যান। অন্য দিকে, ক্যাশ ভ্যানটির চালককে বলা হয়, ‘‘থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে টাকা ভর্তি বাক্সগুলি আরবিআই অফিসে নিয়ে যেতে হবে।’’ রাস্তার মধ্যে নামিয়ে দেওয়া হয় ক্যাশ ভ্যানের চালককে। তত ক্ষণে অন্য গাড়িটিও চলে আসে মারুতি ভ্যানের কাছে। তার পরে বন্দুক দেখিয়ে চালককে নির্দেশ দেওয়া হয় ভ্যানে থাকা ক্যাশবাক্সগুলি মারুতি এবং অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য। তার পরে চালককে রাস্তার মাঝে ফেলে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
ওই তিন কর্মী সিদ্দাপুরা থানায় গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা কাটলেও ক্যাশ ভ্যান এবং ‘আরবিআই কর্তারা’ না-আসায় সন্দেহ হয় তাঁদের। তখনই পুলিশকে গোটা ঘটনা জানান। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সীমান্তকুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার প্রত্যেকটা দিক খতিয়ে দেখছি। দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশের আটটি দল বিভিন্ন দিকে তল্লাশি চালাচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ।’’
সঞ্জয় নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুষ্কৃতীদের একটি গাড়িতে সরকারি লোগো লাগানো ছিল। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই গাড়ির নম্বরপ্লেটও ভুয়ো। তবে মালিকের খোঁজ শুরু হয়েছে।